বিলিভ ইট অর নট

দুশ্চিন্তামুক্ত থাকলে ফিরতে পারে পাকা চুলের রং

প্রতীকী ছবি | সংগৃহীত

মানসিক চাপের সঙ্গে চুল পাকার সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা প্রচলিত আছে। তবে নতুন এক গবেষণা বলছে, মানসিক চাপ চুলের রঙে প্রভাব ফেলে। তাই চাপমুক্ত হয়ে গেলে চুল আবার ফিরে পেতে পারে হারানো রং! 

সায়েন্স ডেইলির সিনিয়র লেখক, সাইকিয়াট্রিস্ট ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মার্টিন পিকার্ড বলেন, মানুষের বয়স শুধু সময়ের সঙ্গে সরলরেখায় বাড়ে তা নয়৷ বয়সের পরিবর্তনটি থেমে থাকতে পারে, এমনকি শরীরের বয়স বাড়লেও দিন দিন মানুষকে আরও তরুণ দেখাতে পারে!' 

তবে এই ব্যাপারটি অস্থায়ী। নির্দিষ্ট বয়সসীমার মানুষের ভেতরেই এটা ঘটে, মাথায় থাকা এত এত চুলের মাঝে অল্প পরিমাণ চুলের ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটতে পারে। 

যেমন, ড. পিকার্ডের এই গবেষণায় নমুনা হিসেবে অংশ নেন মাত্র ১৪ জন স্বেচ্ছাসেবী। এর ভেতর ছিলেন ৯ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৬৫ বছরের বৃদ্ধও৷ এদের কেউ চুল ডাইং করেননি কিংবা কৃত্রিম কোনো রঙে কখনো চুল রাঙাননি৷ 

প্রতিজনকে দেওয়া হয়েছিল একটি করে ডায়েরি। প্রতি সপ্তাহে কোনদিন তারা কেমন মানসিক চাপ বোধ করছেন, তা সেখানে লিখে রাখতেন। 

প্রাপ্ত ফল থেকে দেখ গেছে, চুল পাকার সঙ্গে মানসিক চাপের সম্পর্ক আছে। আর বিশেষ করে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানসিক চাপ মুক্তির পর থেকে পাকা চুলগুলোও উধাও হয়ে গেছে!

গবেষণায় অংশ নেওয়া এক স্বেচ্ছাসেবী তরুণ যখন ছুটি কাটাতে যান, ফেরার পর দেখা যায়, মানসিক চাপ কমার সঙ্গে সঙ্গে তার মাথায় পাওয়া আগের ৫টি পাকা চুল কালো হয়ে গেছে! এছাড়া 'রিপিগমেন্টেশন' ঘটতে দেখা গেছে ১০-১৪ জনের ক্ষেত্রেই। এই প্রক্রিয়ায় চুলের ওপর দিকটা সাদা দেখায়, কিন্তু যত নিচে যাওয়া হয় চুল তত কালো দেখাতে থাকে। 

গবেষকরা চুলে থাকা হাজারো প্রোটিনের পরিমাণ মেপেছেন, দেখেছেন সেসব কীভাবে পরিবর্তিত হয়। যখন চুল পাকে, তারা দেখেছেন ৩০০ প্রোটিনেও পরিবর্তন আসে। আসলে মানসিক চাপের ফলে এ ক্ষেত্রে মূল পরিবর্তনটি ঘটে মাইটোকন্ড্রিয়ায়। পিকার্ড যেমন বলছেন, 'মাইটোকন্ড্রিয়া আসলে কোষগুলোর ভেতর ছোট অ্যান্টেনার মতো, এরা বিভিন্ন উদ্দীপনায় সাড়া দেয়, যার ভেতর মানসিক চাপও একটি।' 

তবে চুলের কালো রং আবার ফিরে আসার এই পরীক্ষা ইঁদুরের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। অবশ্য ইঁদুরের চুলের ফলিকলের গঠন আলাদা। 

তবে মানুষ চাক আর না চাক, মানসিক চাপ জীবনের অংশ- কারণ, সবকিছু প্রত্যাশামাফিক ঘটে না। রাগ, বিরক্তি, ঘৃণা প্রকাশ করতে না পারলে মানসিক চাপ বাড়ে, সঙ্গে কোষগুলোরও বয়স বৃদ্ধি তরান্বিত হয়। তবে আপনি যদি মাঝবয়সী হন, সে ক্ষেত্রে মানসিক চাপে আপনার চুল পাকলেও চাপ কমলে রঙ আবার কালো হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। 

যদি স্বাভাবিকভাবেই বয়সের কারণে চুল পাকতে শুরু করে, তাহলে এটি পাকতে থাকবে। পিকার্ড এটাও দেখেছেন, ৭০ বছরের এক বৃদ্ধকে সর্বক্ষণ আনন্দে রাখলেও তার চুলের  কালো রঙ ফেরত আসে না, আবার ১০ বছরের কোনো শিশুকে কোনোভাবে মানসিক চাপ দিলেও তার চুল পেকে যায় না। 

তবে চুল পাকলে তা আপনাদের ভালো না-ই লাগতে পারে। তাই পরিমিত খান, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন, আর যা করলে মনটা আরেকটু আনন্দে থাকবে সেরকম কোনো কাজের জন্যও কিছুটা সময় রাখুন। তাহলে ইতিবাচক হরমোনগুলোর নিঃসরণ ঘটবে বেশি বেশি, মাইটোকন্ড্রিয়া হবে অধিক কার্যকর, কোষগুলোও তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যাবে না। ফলে আপনিও ধরে রাখতে পারবেন তারুণ্য- দেহের, ত্বকের ও চুলের।

 

তথ্যসূত্র: রিপলিস বিলিভ ইট অর নট

গ্রন্থনা: মাহমুদ নেওয়াজ জয় 
 

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

10h ago