‘ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কী প্রভাব নির্বাচনে পড়বে বলার সময় এখনো আসেনি’

বিচারে দোষী সাব্যস্তের পর আদালত থেকে বের হয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
বিচারে দোষী সাব্যস্তের পর আদালত থেকে বের হয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে নিউইয়র্কের একটি আদালতে। এই ঐতিহাসিক রায়ে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কী প্রভাব পড়তে পারে, সেটা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী কেনেডি পরিবারের সদস্য রবার্ট এফ. কেনেডি।

তিনি পূর্বাভাষ দেন, নিউইয়র্ক ট্রায়ালের সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের অসুবিধার চেয়ে সুবিধাই বেশি হবে।

টেক্সাস ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কিথ গ্যাডি জানান, ট্রাম্পের বিচারের রায়ে মার্কিন নির্বাচনের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা এখনো বলার সময় আসেনি।

'হয়তো এতে ভোটে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। তবে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে কিছু মানুষ তাদের ভোটের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন', যোগ করেন তিনি।

এদিকে আদালত থেকে বের হয়েই আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় মেতেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তার বিরুদ্ধে আনা ৩৪ অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণিত হওয়ার পর ট্রাম্প ঘোষণা দেন, 'আমি একজন রাজনৈতিক বন্দি'।

আজ শুক্রবার তিনি তার নিউইয়র্কের তার নিজস্ব ভবন ট্রাম্প টাওয়ার থেকে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন।

নিউইয়র্কের মামলার পাশাপাশি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও তিনটি গুরুতর অভিযোগের মামলার কার্যক্রম চলছে, যার মধ্যে আছে ২০২০ সালে নির্বাচনের ফল বদলানোর প্রচেষ্টা, ফ্লোরিডায় নিজের বাড়িতে সরকারি নথি লুকিয়ে রাখা।

তবে নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এসব মামলার শুনানি শুরুর তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগকে 'ষড়যন্ত্র'হিসেবে উপস্থাপনে সফল হয়েছেন। যা হতে পারতো তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের সূত্রপাত, সেই আইনি ঝামেলাকে তিনি ইতিবাচক বিষয়ে পরিবর্তন করে অনেক ভোটারের সহানুভূতি আদায়ে সমর্থ হয়েছেন।

তিনি এমন কী নিজেকে নেলসন ম্যান্ডেলার মতো রাজনৈতিক বন্দীদের সঙ্গে তুলনা করেন।

তিনি তার সমর্থকদের জানিয়েছেন যে তার বিরুদ্ধে আনা এসব কেলেঙ্কারির অভিযোগ তার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার 'গভীর রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র'।

ট্রাম্পের আইনি ঝামেলা নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক রয়েছেন প্রতিপক্ষ জো বাইডেন। বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেন 'আইনি প্রক্রিয়ায়' নাক গলাচ্ছেন, এ অভিযোগ যাতে রিপাবলিকানরা কোনো ভাবেই করতে না পারে, সে বিষয়ে খুবই সতর্ক আছেন বাইডেন।

এ কারণেই, এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের আইনি সমস্যা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের পর বাইডেনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি সুর পালটাবেন কী না।

বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণা দল এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, 'কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন'।

তবে 'গণতন্ত্রের প্রতি ট্রাম্প আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন', উল্লেখ করে ডেমোক্র্যাট দলের নির্বাচনী প্রচারণা দল।

বাইডেন নিজে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইদেন ফিলাদেলফিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইদেন ফিলাদেলফিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

আজ শুক্রবার ব্যস্ত সময় কাটাবেন বাইডেন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রীর সংগে বৈঠক ও সুপার বোল চ্যাম্পিয়ন ক্যানসাস সিটি চিফ দলের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্পের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন বাইডেন।

প্রথমবার ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে এবং সে অভিযোগ প্রমাণের পর নতুন ইতিহাস গড়েছেন ট্রাম্প। তবে তিনি ৫ নভেম্বর বাইডেনকে পরাজিত করতে পারলে আরও ইতিহাস তৈরি করবেন।

কাগজে কলমে ট্রাম্পের চার বছরের জেল হতে পারে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে প্রবেশন বা অর্থদণ্ড দেওয়া হবে।

১১ জুলাই ট্রাম্পের বিচারের রায় ঘোষণা করবেন বিচারক হুয়ান মেরচান।

এর চার দিন পরেই রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনে ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

11h ago