পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অভিযানের দ্বিতীয় দিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০

জেনিনের সড়কে ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। ছবি: রয়টার্স
জেনিনের সড়কে ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। ছবি: রয়টার্স

বেশ কয়েক বছরের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অভিযানের দ্বিতীয় দিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হয়েছে। এছাড়াও, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজারো মানুষ।

আজ মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।  

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ১০ জন নিহত ও অপর ১০০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সামরিক হেলিকপ্টারে করে ১ আহত ইসরায়েলি সেনাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জেনিনের উপ গভর্ণর কামাল আবু রব জানান, এই অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় ৩ হাজার মানুষ জেনিনের শরণার্থী শিবির ছেড়ে পালিয়েছেন। তিনি আরও জানান, জেনিন শহরের স্কুল ও অন্যান্য জায়গায় তাদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থি সরকারের নির্দেশনায় পরিচালিত এ অভিযানে মূল লক্ষ্য দেশটির উত্তরাঞ্চলের শহর জেনিন। এ হামলায় সাঁজোয়া যান, সেনাবাহিনীর বুলডোজার ও ড্রোনের ব্যবহার হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে জেনিনে দেখা গেছে দোকানপাট চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেছে। অল্প কয়েকজন মানুষ ধংসস্তুপ ও পুড়ে যাওয়া ব্যারিকেডের মধ্য দিয়ে সড়কে চলাফেরা করছিলেন।

তখনো আকাশে ড্রোন উড়ে যাওয়ার শব্দ শোনা যাচ্ছিল বলে এএফপির এক সাংবাদিক জানান।

১৮ হাজার বাসিন্দার শরণার্থী শিবিরের ভেতর বেশ কয়েকটি সড়কের বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিছু বিদ্যুৎ ও পানির লাইনও ক্ষতির শিকার হয়েছে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে তারা জেনিনে রাতভর 'সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম' চালিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত তা অব্যাহত রেখেছে। তাদের লক্ষ্য, শরণার্থী শিবিরের একটি ভূগর্ভস্থ খনিকে 'অকার্যকর' করা, কারণ সেখানে বিস্ফোরক উপকরণ লুকিয়ে রাখা হচ্ছিল।

মঙ্গলবার দেওয়া বিবৃতিতে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আরও জানায়, তারা এ এলাকায় অবস্থিত স্বাধিনতাকামী সংগঠনের ২টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চিহ্নিত করে অকেজো করে দিয়েছে।

নেতানিয়াহু জানান, ইসরায়েলি বাহিনী, 'জেনিনে সন্ত্রাসবাদীদের ডেরায়' পৌঁছে গেছে এবং 'নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ধ্বংস ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র আটক করেছে।'

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযানকে 'জেনিনের জনগণের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ' হিসেবে অভিহিত করেছে।

গত ১৫ মাসে পশ্চিম তীরে বেড়েছে সহিংসতার মাত্রা। আন্তর্জাতিক মহলে এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। জেনিনের মতো শহরগুলোতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনিরাও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে একাধিকবার ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে এবং প্রত্যুত্তরে ইহুদী উগ্রবাদীরা ফিলিস্তিনি গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে।

১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে ইসরায়েল পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ করে। ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকার সমন্বয়ে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে চায়—যে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেরও সমর্থন রয়েছে।

তবে ২০১৪ সালের পর এ বিষয়টি নিয়ে আর কোনো আলোচনা হয়নি। এর আগে মার্কিন মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা চললেও এতে ফল আসেনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

5h ago