নৈতিকতা পুলিশ প্রত্যাহারের পর এখন 'হিজাবও' বিবেচনা করছে ইরান
ইরানের সংসদ ও বিচার বিভাগ দেশটির হিজাব আইন 'বিবেচনা' করছে। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মন্তাজেরি এ কথা জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্তাজেরি আরও জানান, ইরানের নৈতিকতা পুলিশকে 'প্রত্যাহার' করা হয়েছে। তবে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এসব মন্তব্যের প্রতিবাদ করে জানিয়েছে, এই বাহিনীর দেখভাল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিচার বিভাগ নয়।
ইরানে নারীদের জন্য জনসম্মুখে হিজাব পরা আবশ্যক। দেশটিতে প্রচলিত কঠোর শরিয়া আইনের আওতায় এই নীতিমালা বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে তথাকথিত 'নৈতিকতা পুলিশ'।
সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সী নারী মাহসা আমিনিকে নিয়ম অনুযায়ী হিজাব না পরার অপরাধে গ্রেপ্তার করে নৈতিকতা পুলিশ।
১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে মাহসা মারা গেলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়, যা এখনও চলছে।
কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ দমনে সহিংস নীতি অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
হিজাব আইন বিষয়ে মন্তাজেরি আরও বলেন, 'আমরা জানি, আপনারা শহরে হিজাববিহীন নারী দেখলে ক্ষুদ্ধ হন, কিন্তু আপনাদের কী ধারণা কর্মকর্তারা এ বিষয়টি নিয়ে নীরব রয়েছেন? এ বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি বলতে পারি, সংসদ ও বিচার বিভাগ উভয়ই এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। উদাহরণস্বরূপ, গতকাল আমরা সংসদের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছি এবং আপনারা আগামী ১-২ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল দেখতে পাবেন।'
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে এই আইন চালু করা হয়েছিল।
রোববার এক ধর্মীয় সম্মেলনে নৈতিকতা পুলিশ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে অ্যার্টনি জেনারেল বলেন, 'বিচার বিভাগের সঙ্গে নৈতিকতা রক্ষার পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। যে প্রক্রিয়ায় এটি স্থাপন করা হয়েছিল সেভাবেই এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।'
আরবিতে সম্প্রচারিত রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল আল-আলম দাবি করেছে, বিদেশী গণমাধ্যমে মন্তাজেরির মন্তব্যকে এমন ভাবে প্রচার করা হচ্ছে, যাতে মনে হচ্ছে 'বিক্ষোভের কারণে কর্তৃপক্ষ হিজাব ও ধর্মীয় নৈতিকতার ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করেছে।'
রোববার বিকেলে প্রচারিত অনুষ্ঠানে আল-আলমের পক্ষ থেকে জানানো হয়, 'তবে ইরান সরকারের কোনো কর্মকর্তা এখনও জানাননি যে নৈতিকতা পুলিশের টহল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।'
Comments