ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ইরানের ড্রোন হামলা: যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন। ছবি: রয়টার্স

ইরানের ভূখণ্ড থেকে ধেয়ে আসা একটি ড্রোন ভারত মহাসাগরে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী একটি বাণিজ্যিক জাহাজে আঘাত হেনেছে। ইরান এই ড্রোন ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর।

আজ রোববার যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিরক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ইরানে নির্মিত শাহেদ ড্রোন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইরানে নির্মিত শাহেদ ড্রোন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

পেন্টাগনের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, জাপানের মালিকানাধীন 'কেম প্লুটো' নামের জাহাজটি লাইবেরিয়ার পতাকা বহন করছিল। নেদারল্যান্ডস পরিচালিত এই রাসায়নিক ট্যাংকারটিতে গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ইরান থেকে ছোড়া ড্রোন আঘাত করে। ভারতের উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

পেন্টাগন এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২১ সালের পর থেকে এ নিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজে সপ্তমবারের মতো হামলা চালাল ইরান।

এই হামলার ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ট্যাংকারে লাগা আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি এই অভিযোগের জবাবে জানান, হুতিরা 'তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেয়'। এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।

অপরদিকে অপরিশোধিত তেল পরিবহনে নিয়োজিত একটি ভারতগামী ট্যাংকার জাহাজ লোহিত সাগরে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

২০ ডিসেম্বর হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান। ছবি: রয়টার্স
২০ ডিসেম্বর হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান। ছবি: রয়টার্স

ভারতের উদ্দেশে যাত্রার সময় গ্যাবনের পতাকাযুক্ত তেলের ট্যাংকার এম/ভি সাইবাবার বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালায় হুতিরা। জাহাজের আরোহীদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের নাগরিক ছিলেন বলে জানা গেছে। হামলার পর জাহাজটির পক্ষ থেকে কাছাকাছি অবস্থিত মার্কিন ডেস্ট্রয়ার জাহাজের কাছে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়।

মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড এক্সের এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল শনিবার ভারতের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই হামলা হয়।

মার্কিন সশস্ত্র জাহাজ ইউএসএস লাবুন জাহাজটির সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সদস্যরা। তাদের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৪০ জন। এ ঘটনার পর একইদিনে হামাসকে নির্মূলের উদ্দেশ্যে গাজার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গত ৯ ডিসেম্বর হুতি বিদ্রোহীরা হুমকি দিয়ে জানায়, তারা ইসরায়েলগামী সব জাহাজকেই হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করবে। সংগঠনটি আন্তর্জাতিক নৌপরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইসরায়েলি বন্দরের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

ইরান, হামাস ও হুতি বাহিনীর সবচেয়ে বড় ও প্রকাশ্য আন্তর্জাতিক সমর্থক-পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিবেচিত। হুতিরা হামলা শুরুর পর থেকেই এসব হামলার জন্য সরাসরি ইরানকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

সেদিন হুতিদের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, 'যদি গাজা তার প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার ও ওষুধ না পায়, তাহলে লোহিত সাগর দিয়ে ইসরায়েলি বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া সব জাহাজ, তা সে দেশেরই হোক না, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর হামলার লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।'

গাজায় সংঘাত সৃষ্টির পর বড় নৌপরিবহন সংস্থাগুলো লোহিত সাগরের বদলে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে মালামাল পরিবহন করছে। এতে তেলের খরচ অনেক বেড়ে গেলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে এই উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাগুলো।

হুতি বাহিনীর নতুন সদস্যরা গাজায় যেয়ে ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করবেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হুতি বাহিনীর নতুন সদস্যরা গাজায় যেয়ে ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করবেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কয়েকটি দেশ এক যৌথ বাহিনী গঠন করে লোহিত সাগরের দক্ষিণে ও এডেন উপসাগরে নৌ-মহড়া পরিচালনায় সম্মত হয়েছে।

'প্রসপারিটি গার্ডিয়ান' (প্রগতিশীল রক্ষাকর্তা) নামের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি গ্রীস, বাহরাইন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সেশেলস, স্পেন ও আরও কয়েকটি দেশ অংশ নেবে।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

5h ago