মায়ের শাড়িতে মায়ের কবরের পাশে শায়িত সিরাজুল আলম খান
বৃষ্টিস্নাত শেষ বিকেলে নোয়াখালীতে মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান সংগঠক, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নিউক্লিয়াসের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান।
এর আগে আজ শনিবার দুপুর ৩টার দিকে সিরাজুল ইসলাম খানের মরদেহ তাঁর নিজ গ্রাম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুরের সাহেব বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এসময় তাঁকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে নিকটাত্মীয়রা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ।
বাদ আসর বেগমগঞ্জ সরকারী পাইলট হাইস্কুল মাঠে সিরাজুল আলম খানের শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তীব্র বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সিরাজুল আলম খানের জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ।
জানাজার আগে সিরাজুল আলম খানকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
এসময় সিরাজুল আলম খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সহসভাপতি আ স ম আবদুর রব, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার।
আ স ম আবদুর রব তাঁর বক্তব্য বলেন, 'সিরাজুল আলম খান এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি নিজের সর্বস্ব এই দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রদান করতে প্রস্তুত ছিলেন। তিনি কখনো নিজের চিন্তা করেননি। তিনি কোনো পরিবারের সন্তান ছিলেন না, দেশের সব অসহায়র্ত মানুষের সন্তান ছিলেন। তিনি সমস্ত দল মত নির্বিশেষে গণমানুষের প্রতিনিধি হিসেবে রাজনীতি করেছেন। তিনি তাই সর্বস্তরের জনগণের সরকার কায়েম করতে চেয়েছিলেন। তাঁর অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারলেই তাঁর প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদান করা হবে।'
নাজমুল হক প্রধান তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার ছিলেন সিরাজুল আলম খান। ক্ষমতা ও জনতার কাছ থেকে দূরে থেকে আমরা জনতার পক্ষে ভিন্ন গঠন করেছিলাম। জনতার পক্ষে কীভাবে দাঁড়াতে হয় তা সিরাজুল আলম খান আমাদের শিখিয়েছেন। তাঁর ইতিহাস ও আদর্শ চিরকাল অমর থাকবে।'
জানাজা শেষে শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সিরাজুল আলম খানকে মায়ের শাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
Comments