‘জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা পূরণে ব্যবস্থা নেবে অন্তর্বর্তী সরকার’
স্বৈরাচারের পতন হলেও তাদের দোসররা এখনো দেশে রয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, 'আমরা বারবার বলছি বহু মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময় যে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সরকারকে ব্যর্থ করতে দেওয়া যাবে না। এ দেশের জনগণের প্রত্যাশা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়া। বিগত ১৭ বছর সংগ্রাম করে সেই অধিকার যাতে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে অন্তর্বর্তী সরকার।'
আজ সোমবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে 'গণসমাবেশ এবং আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা' কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই কথা বলেন।
এর আগে গুম-খুন এবং হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ও তাদের পরিবারের সদস্যরা নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
বিকেল ৩টায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টার আগে থেকেই মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা।
কিশোরগঞ্জ সদর, অষ্টগ্রাম, ইটনা, কটিয়াদী, ভৈরব, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর, তাড়াইল, হোসেনপুর, পাকুন্দিয়া, কুলিয়ারচর, মিঠামইন, নিকলী এলাকার নেতাকর্মীরা হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে গণসমাবেশে যোগ দেন।
তারেক রহমান বলেন, 'আমাদের এটিও সতর্কভাবে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে জনগণের চাওয়া-পাওয়া নষ্ট হয়ে না যায়। আবার নতুন করে কোনো স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করার সুযোগ না পায়। স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা তাদের ষড়যন্ত্রকে অব্যাহত রেখেছে। তাই গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল, প্রতিটি মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। একইভাবে আমরাও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্র মেরামতের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।'
'স্বৈরাচার বাংলাদেশের মানুষকে আবদ্ধ করে রেখেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে গুলির সামনে নিজেদের বুক পেতে কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়। এ দেশের মানুষ বারবার প্রমাণ করেছেন, তারা স্বৈরাচারীর শাসন মেনে নিতে রাজি না। ১৯৭১ সালে যেমন লাখ লাখ শহীদের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, তেমনি রক্ত দিয়ে ৫ আগস্ট মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য স্বৈরাচারকে বিদায় দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এই আত্মত্যাগ আমাদের ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ নতুন প্রত্যাশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ভবিষ্যতের জন্য তাকিয়ে আছে, অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ যে প্রত্যাশা নিয়ে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ মুক্তভাবে কথা বলতে পারবে, বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সেই বাংলাদেশ আমাদের গড়ে তুলতে হবে,' যোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাধাগ্রস্ত করার জন্য স্বৈরাচারেরা এখনো তাদের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। শহীদদের আত্মত্যাগ তখনই মূল্যায়িত হবে যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করা।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বিগত দিনে দেখেছি স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ভাবে জাতিকে বিভক্ত করেছে। বিএনপি বিভক্তি চায় না, আমরা চাই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে।'
তার দল জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেলে বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারকে খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে 'স্বপ্ন প্রকল্প ফ্যামিল কার্ড' দেওয়া হবে বলেও এ সময় জানান তারেক।
তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রের পক্ষে সব নাগরিক পর্যায়ক্রমে কার্ডটি পাবেন। প্রাথমিকভাবে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায়ের সুবিধা বঞ্চিতরা এর আওতায় আসবেন এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ চারজন বিবেচনায় এ কার্ড বিতরণ করা হবে।'
Comments