পাগলা মসজিদের ওয়েবসাইট উদ্বোধন, এখন থেকে ঘরে বসেই দান করা যাবে

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়েছে। এই সাইটের মাধ্যমে জানা যাবে পাগলা মসজিদের ইতিহাস ঐতিহ্য, নামাজের সময়সূচিসহ নানা বিষয়। এ ছাড়াও এই সাইটের মাধ্যমে ঘরে বসেই পাগলা মসজিদে দান করা যাবে।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় মসজিদ প্রাঙ্গণে এই ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
ওয়েবসাইটটি উদ্বোধনের সময় জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান এই সাইটে বিকাশের মাধ্যমে (পেমেন্ট গেটওয়ে বিকাশ) পাঁচ হাজার ৪০০ টাকা পাগলা মসজিদে দান করেন। এর আগে ওয়েবসাইটটি অনলাইনে সচল করা হয়। www.paglamosque.org ওয়েবসাইটটি ওপেন করে 'ডোনেট নাও'-এ ক্লিক করলেই বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে পাগলা মসজিদের দান করা যাবে।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি গড়ে ওঠে। দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে এই মসজিদে দান করে থাকেন। মানুষ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকারও দান করেন। এ ছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়। ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে লোহার সিন্দুকগুলো প্রতি তিন থেকে চার মাস পর পর খোলা হয়।
সর্বশেষ সিন্দুক খোলা হয়েছিল গত ১২ এপ্রিল। তখন পাগলা মসজিদের ১১টি দানসিন্দুক খুলে রেকর্ড নয় কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া যায়। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ব্যাংকে পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে শুধু নগদ টাকা জমা আছে প্রায় ৯০ কোটির মতো। এ ছাড়া সিন্দুকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রাসহ গরু ছাগল ও অন্যান্য জিনিসপত্রের নিলামের টাকা রয়েছে।
পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়ে থাকে।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, দানের অর্থ দিয়ে মসজিদের পাঁচ একর জায়গায় একটি দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। এতে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। মূল মসজিদটি ছয়তলা হবে। প্রতি তলায় একসঙ্গে পাঁচ হাজার লোক নামাজ আদায় করতে পারবেন। পাশাপাশি আরও পাঁচ হাজার নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। সব মিলিয়ে ৪০ হাজার লোক যাতে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন, সে ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া থাকবে অ্যাকাডেমিক ভবন ও অতিথিশালা।
Comments