‘জিলাপি খেতে চাওয়া’ সেই ওসির প্রত্যাহার ঠেকাতে বিএনপির থানা ঘেরাও, বিক্ষোভ

হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের টাকা থেকে 'জিলাপি' খেতে চাওয়া কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার সেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেনের প্রত্যাহার ঠেকাতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই প্রত্যাহার আদেশ বাতিলের দাবিতে আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ঠাকুর, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মনির উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোমেশ ঘোষ, ইটনা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এমএ সালেক, ইটনা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজাদুর রহমান, সদস্য সচিব মো. ইফতেখারসহ কয়েকশ নেতাকর্মী অংশ নেন। ইটনা সদরের পুরান বাজার এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে উপজেলা গেটের পাশে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ ও এর দোসরদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও ষড়যন্ত্রে ওসিকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এমনকি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগ করা কথিত এক সমন্বয়কের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিত ফোনালাপের অডিও সামাজিকমাধ্যমে ফাঁস করে জনবান্ধব ওসিকে বদলি করা হয়। তাকে দ্রুত পুনর্বহাল করতে হবে।
স্থানীয় এই বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ১২৮ বস্তা ভিজিএফের চাল উদ্ধারের ঘটনায় গত ২০ মার্চ রাতে ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিলুজ্জামান ভূঁইয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার এই গ্রেপ্তারের পর আওয়ামী দোসররা ইটনা থানার ওসি মনোয়ারকে সরাতে নানাভাবে তৎপর হয়ে ওঠে। এই তৎপরতার অংশ হিসেবে সমন্বয়ক দাবিদার আফজাল হোসেন শান্ত নিজে থেকে ওসিকে ফোন করে কল-রেকর্ড ফাঁসের নাটক সাজান।
ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেন বলেন, ইটনা থানার জনবান্ধব ওসি মনোয়ারকে অন্যায়ভাবে আওয়ামী লীগের দোসরদের মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই জনবান্ধব ওসির প্রত্যাহার আদেশ বাতিল করে যেন তাকে দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হয়।
এর আগে গতকাল কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর সই করা অফিস আদেশে এই ওসিকে ইটনা থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
ওসি মনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি চাকরি বদলির চাকরি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যা বলে মনে করেছেন, সেটা করেছেন। তবে আমি কোনো অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ওসি মনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করে ইটনা থানায় নতুন ওসি দেওয়া হয়েছে। শুনেছি আজ এ ব্যাপারে মিছিল হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
Comments