‘কেউ তাহা দেখিবে না;—সেদিন এ পাড়াগাঁর পথের বিস্ময়’

ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

মাঝ কার্তিক পেরিয়ে গেলেও দিনভর রোদের তাপে চরাচর তেতে থাকছে চৈত্রের মতোই। আবার ছোট হয়ে আসা বেলার স্বল্পায়ু বিকেল পেরিয়ে ঝুপ করে নেমে আসা সন্ধ্যার বাতাসে হালকা হিমেল ভাব হেমন্তেই জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।

এদিকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে কুয়াশার পাতলা চাদর। ভোরে তা শিশির হয়ে ঝরে পড়ছে ফুল-ফসলে, গাছের পাতায়, ঘাসের বুকে।

ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

এই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে শীত হলো ক্ষণিকের অতিথি। আর কুয়াশা হলো এই ঋতুর পরিচয় বহনকারী প্রধান অনুষঙ্গগুলোর একটি।

এ কুয়াশাকে রীতিমতো বিস্ময়ের চোখে দেখেছিলেন নিসর্গের কবি জীবনানন্দ দাশ। লিখেছিলেন, 'কুয়াশারে নিঙড়ায়ে উড়ে যাবে আরো দূর নীল কুয়াশায়,/কেউ তাহা দেখিবে না;—সেদিন এ পাড়াগাঁর পথের বিস্ময়'।

ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

কুয়াশার সঙ্গে রহস্যের সম্পর্ক চিরকালের। কারণ কুয়াশা দৃষ্টিসীমাকে বাধাগ্রস্ত করে, আড়াল করে। অভিধানে কুহেলিকা কিংবা কুজ্ঝটিকার মতো কুয়াশার সমার্থক শব্দগুলোর দিকে নজর দিলেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

'রূপসী বাংলা'র সনেটগুচ্ছে আবহমান বাংলার রূপ-বৈভবের এক অনন্য চিত্র এঁকেছিলেন জীবনানন্দ। এই কাব্যগ্রন্থে বাংলার বৃক্ষরাজি, ফুল, পাখি, লতা, ঘাস, নদীর মতো নানা কিছুর অনুপুঙ্খ বর্ণনা যেমন পাওয়া যায়, তেমন দেখা মেলে কুয়াশার রহস্যময়তার। তাই হয়তো 'মৃত্যুর আগে' কবিতায় 'নির্জন খড়ের মাঠে পউষ সন্ধ্যায় নরম নদীর নারীকে' কুয়াশার 'ফুল' ছড়াতে দেখেছিলেন তিনি।

ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

জীবনানন্দ এখানে কোন নরম নদীটির কথা বলেছেন তা জানা যায় না। তবে এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত পেলব কুয়াশার ছবিগুলো মৌলভীবাজার শহরের মনু নদীর পাড় থেকে তোলা। আলোকচিত্রী মিন্টু দেশোয়ারা।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh foreign adviser visit to China 2025

Foreign adviser’s China tour: 10 extra years for repaying Chinese loans

Beijing has assured Dhaka it will look into the request to lower the interest rate to ease Bangladesh’s foreign debt repayment pressure

10h ago