‘ওরা কেন চোখে গুলি করল?’

চোখে ছররা গুলি
গত শুক্রবার রাজধানীর বংশালে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে পুলিশের ছররা গুলিতে আহত হন দিনমজুর মুজিবুর রহমান (৩৫)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। ছবি: দীপন নন্দী

কোটা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গত বৃহস্পতিবার উত্তরায় যখন পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেড ছোড়ে তখন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন ১৮ বছরের মো. ইমরান।

এসময় পুলিশের ছররা গুলি ইমরানের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এসে লাগে। এমনকি তার মাথা আর চোখও বাদ যায়নি।

গত রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ইমরান। পাশেই ছেলের জন্য কাঁদছেন মা। অপারেশন করেও তার একটি চোখ রক্ষা করা যায়নি। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তার মাথার ভেতরে ঢুকে যাওয়া ছররা গুলি অস্ত্রোপচার করে বের করা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

মা পারভীন বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ইমরান আমার একমাত্র ছেলে। ও কোনোরকমে বেঁচে আছে। আমার চোখের সামনে তার একটা চোখ নষ্ট হয়ে গেল। অন্য চোখটার অবস্থাও ভালো না। এখনো ওর মাথার ভেতরে ছররা গুলি রয়ে গেছে।

'ওরা আমার ছেলেকে কেন গুলি করল? ওরা কেন চোখে গুলি করল? ওর কী দোষ ছিল? একটা ন্যায্য আন্দোলনে যোগ দেওয়া কি অপরাধ ছিল?' হতাশা আর ক্ষোভ থেকে কথাগুলো বলছিলেন পারভীন বেগম।

তিনি বলেন, 'ইমরান বেঁচে গেলেও একটা চোখে তো আর দেখতে পাবে না। ওর জীবন তো আর আগের মতো হবে না।'

শুধু ইমরানই নয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে আন্দোলনে সহিংসতা শুরুর পর চার দিনে অন্তত ১১৮ জন চোখে আঘাত নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন, যাদের বেশিরভাগই ছররা গুলিতে আহত। গত ২১ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে এ ধরনের আঘাত নিয়ে ৬৭ জন ভর্তি ছিলেন।

এই বিভাগের দুই চিকিৎসক জানান, চিকিৎসাধীনদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি এক চোখ বা দুই চোখেরই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।

আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিস্থিতিও এর থেকে ভিন্ন নয়। ২১ জুলাই পর্যন্ত এখানে অন্তত ২২৭ জনের চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছররা গুলিতে আহত। হাসপাতালের পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলেন, আহতদের বেশিরভাগই সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

BFIU finds NI Mazumder’s money laundering links

Nazrul Islam Mazumder, chairman of Nassa Group and a close associate of deposed prime minister Sheikh Hasina, has been accused of trade-based money laundering amounting to Tk 16,000 crore by the Bangladesh Financial Intelligence Unit.

10h ago