নিহত সাঈদের শেষ পোস্ট ‘যতদিন বেঁচে আছেন মেরুদণ্ড নিয়ে বাঁচুন’

ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এই শিক্ষার্থীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার শরীরে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন পাওয়া যায়।

মৃত্যুর একদিন আগে, গতকাল দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে শহীদ ড. শামসুজ্জোহাকে স্মরণ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন আবু সাঈদ।

শহীদ ড. শামসুজ্জোহার উক্তি 'আজ আমি ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত। এর পর কোনো গুলি হলে তা ছাত্রকে না লেগে যেন আমার গায়ে লাগে'— উক্তি পোস্ট করেন তিনি।

আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ওই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পোস্টে তিনি লেখেন, 'স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার স্যার!

আপনার সমসাময়িক সময়ে যারা ছিল সবাই তো মরে গেছে, কিন্তু আপনি মরেও অমর। আপনার সমাধি, আমাদের প্রেরণা। আপনার চেতনায় আমরা উদ্ভাসিত।

এই প্রজন্মে যারা আছেন, আপনারাও প্রকৃতির নিয়মে একসময় মারা যাবেন। কিন্তু যতদিন বেঁচে আছেন মেরুদণ্ড নিয়ে বাঁচুন। নায্যদাবিকে সমর্থন জানান, রাস্তায় নামুন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হয়ে দাড়াঁন। প্রকৃত সম্মান এবং শ্রদ্ধা পাবেন। মৃত্যুর সাথে সাথেই কালের গর্ভে হারিয়ে যাবেন না। আজন্ম বেঁচে থাকবেন শামসুজ্জোহা হয়ে।'

'অন্তত একজন "শামসুজ্জোহা" হয়ে মরে যাওয়াটা অনেক বেশি আনন্দের, সম্মানের আর গর্বের,' লেখেন তিনি।

এর আগে, গতকাল সকাল ৯টা ৫ মিনিটে আরেকটি পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি।

তার ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে দেখা যায় ওই পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আদনান আবিরকে উদ্ধৃত করে তিনি লিখেছেন, 'যদি আজ শহীদ হই, তবে আমার নিথর দেহটা রাজপথে ফেলে রাখবেন। ছাত্রসমাজ যখন বিজয় মিছিল নিয়ে ঘরে ফিরবে, তখন আমাকেও বিজয়ী ঘোষণা করে দাফন করবেন। একজন পরাজিতের লাশ কখনও তার মা-বাবা গ্রহণ করবে না।'

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ইতিহাসে উজ্জ্বল নাম অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (তৎকালীন রিডার) ছিলেন। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

1h ago