পটুয়াখালীতে ঝড়ো বাতাস-বৃষ্টি, আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে স্থানীয়দের
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ঝড়ের কারণে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে ঝড়ের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে শুরু হয়েছে হালকা বৃষ্টিপাত। স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সমুদ্র তীরবর্তী কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, 'আজ সকালে ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের নির্দেশনা পেয়ে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৫ হাজার ১২২ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ চলছে।'
পটুয়াখালী জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, 'এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ১৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।'
এদিকে, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় অবস্থানরত সব পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সেখানকার সব আবাসিক হোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মোতালেব শরীফ রোববার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় কুয়াকাটায় প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। উপকূলের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কুয়াকাটার বহুতল আবাসিক হোটেলগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও সব আবাসিক হোটেলগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।'
কলাপাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইলেকট্রনিক প্রকৌশলী আব্দুল জব্বার শরীফ বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ে রিমালের কারণে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে। সকাল থেকে ভারী বর্ষণ, বাতাস ও সাগর নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে বলা হয়েছে।'
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'এই মুহূর্তে কুয়াকাটা অবস্থানরত সব পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করছি। সার্বিক পরিস্থিতির মোকাবিলায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।'
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, 'দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হলে দ্রুত গাছ অপসারণের জন্য আলাদাভাবে ফায়ার সার্ভিস এবং স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।'
Comments