জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ: ‘ঈদ দিয়ে কী হবে, শুধু প্রিয় সন্তানকে ফেরত চাই’

সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজের নাবিক সাব্বিরের মা-বাবা। ছবি: স্টার

আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশে ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হবে। ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। 

কিন্তু সোমালি জলদস্যুদের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের পরিবারে ঈদের আনন্দের পরিবর্তে বইছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার গুমোট পরিবেশ। 

গত ১১ মার্চ ২৩ নাবিকসহ কয়লাবাহী জাহাজটি দস্যুদের কবলে পড়ে। নাবিকদের জিম্মি করে দস্যুরা। তাদের মধ্যে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গা ধলাপাড়া গ্রামের হারুন-অর-রশিদের ছেলে সাব্বিরও আছেন।

ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে বৃদ্ধ মা-বাবা ও একমাত্র বোনের। কবে ছেলে ঘরে ফিরবে সে আশায় পথ চেয়ে আছেন তারা। 

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বিকেলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সাব্বির জানিয়েছিলেন যে, সে সময় বিষুবরেখা অতিক্রম করছিল তাদের জাহাজ। এরপর আর যোগাযোগ করেননি সাব্বির।

সাব্বিরের বড় বোন মিতু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তাদের নিয়োগকারী শিপিং কোম্পানির কাছ থেকে তারা জেনেছেন যে, সাব্বিরসহ জাহাজের নাবিকরা ভালো আছেন, নিরাপদে আছেন। যদিও সাব্বিরের সঙ্গে তাদের সরাসরি কোনো কথা হয়নি।'

তিনি জানান, সাব্বির গত বছর কোরবানি ঈদ করতে বাড়ি এসেছিলেন। এরপর জাহাজ ছিনতাই হওয়ার মাসখানেক আগে একদিনের জন্য আবার বাড়ি এসেছিলেন।

মিতু বলেন, 'এবার আমাদের আর ঈদ কী? বুঝতেই পারেন। ঈদের আগে আমার ভাই ফিরবে?'

মিতু আরও বলেন, 'সাব্বিরের নিয়োগকারী কোম্পানি থেকে আমাদের পরিবারের নিয়মিত খোঁজ-খবর রেখেছে। ঈদ উপলক্ষে তারা সহায়তাও করতে চেয়েছে।'

'আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি সাব্বির কবে ফিরবে। তারা আমাদের বলেছেন, চেষ্টা চলছে। ঈদে না আসুক, আমার ভাই যেন ফিরে আসে। ভয় লাগছে। শুনেছি জাহাজে খাবার ও পানি ফুরিয়ে যাচ্ছে। আবার শান্তিপূর্ণ জিম্মি মুক্তি না হলে, ওদের যদি কোনো ক্ষতি হয়ে যায়,' মিতু বলেন।

একমাত্র ছেলের খবর পেয়ে সাব্বিরের বৃদ্ধ মা-বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। ঘটনার পর থেকে ছেলের নাম ধরে বিলাপ করছেন তার।   

মা সালেহা বেগম ডেইলি স্টারকে জানান, তার স্বামী স্ট্রোকের রোগী। তার ওপর ছেলের এমন বিপদে দুশ্চিন্তায় দুঃসহ দিন কাটছে তার।

তিনি বলেন, 'ঈদ দিয়ে কী হবে? আমরা শুধু আমাদের প্রিয় সন্তানকে সুস্থভাবে ফিরে পেতে চাই।'

যোগাযোগ করা হলে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে সাব্বিরের পরিবারের খোঁজ-খবর রাখছে স্থানীয় প্রশাসন।  

গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়ে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাশের পর চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হন সাব্বির। পরে সেখান থেকে পাস করে ২০২২ সালে এমভি আবদুল্লাহতে চাকরি নেন তিনি।


  

Comments

The Daily Star  | English

2 killed, 1 injured in clash at Meghna sand quarry

Two people were shot dead and one injured in a clash at a sand quarry on the Meghna river, at the bordering area between Munshiganj and Chandpur this evening

Now