কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কে খানাখন্দে ঝুঁকিপূর্ণ ২২ কিলোমিটার
পটুয়াখালীর কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কে অসংখ্য গর্ত-খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় এটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
যাত্রী ও পর্যটকবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ সড়কে চলাচল করছে।
এ মহাসড়ক দিয়ে কুয়াকাটা সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটক যাতায়াত করেন। কিন্তু গর্ত আর খানাখন্দে এ সড়কের ২২ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে এ সড়কে গিয়ে দেখা যায়, পাখিমারা বাজার থেকে শেখ রাসেল ব্রিজ পর্যন্ত ১১ কিলোমিটারের অবস্থা খুবই নাজুক। এ অংশের গর্ত-খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে সড়কটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।
গর্তে জমে থাকা পানির কারণে সড়কটি এখন কাদাপানিতে পরিপূর্ণ। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। বাস থেকে ওঠানামা করতে গিয়ে যাত্রীদের পোশাক নোংরা হচ্ছে।
কুয়াকাটায় বেড়াতে যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ফাহিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পদ্মা সেতু চালুর পর সহজে ও অল্প সময়ে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। কিন্তু সড়কটির কিছু অংশ খুবই খারাপ। ঝাঁকুনিতে শরীর ব্যথা করছে।'
ফরিদপুর থেকে আসা আ. হালিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চলতি বছরের শীত মৌসুমে একবার কুয়াকাটায় এসেছিলাম তখন রাস্তার অবস্থা এত খারাপ ছিল না। এখন বর্ষাকালে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার।'
বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচলকারী 'মায়ের দোয়া' বাসচালক হিমেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চলতি বর্ষা মৌসুমে পাখিমারা বাজার থেকে শেখ রাসেল সেতুর টোলঘর পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে।'
সাকুরা পরিবহনের চালক আব্দুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়কটিতে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে পানি জমে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ঠিকভাবে গাড়ি চালানো যায় না। খুব কষ্ট হয়। শরীর ব্যথা হয়ে যায়। গর্তের কারণে যাত্রীরাও কষ্ট পান।'
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব শরীফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পদ্মা সেতু চালুর পর থকেই কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। আগে শীতকালে পর্যটক এলেও, এখন সারা বছর কমবেশি পর্যটক কুয়াকাটায় বেড়াতে আসেন।'
'কুয়াকাটা সড়কের কলাপাড়া থেকে একটি অংশ খুব খারাপ হয়ে যাওয়ায় পর্যটকদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য হলেও সড়কটির দ্রুত সংস্কার করা দরকার,' বলেন তিনি।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা বাজার থেকে শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কের কাজ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান ছিল। ফলে আমরা সড়কটির ওই অংশে রুটিন মেরামত করতে পারলেও ৮ বছর ধরে ভালোভাবে সংস্কার করতে পারিনি।'
'সম্প্রতি আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। খুব শিগগির সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। সড়কটির ওই অংশের সংস্কার শেষ হলে কুয়াকাটা থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কিলোমিটার সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন হবে,' বলেন তিনি।
Comments