বিরল সামুদ্রিক সাপ ইয়েলো বেলিড সি স্নেক’র দেখা মিলল কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে

ইয়েলো বেলিস সি এর পুরো জীবন সাগরেই কাটিয়ে দেয়। সাঁতারের জন্য এর শরীর এতটাই উপযুক্ত যে তা স্থলভাগে চলাফেরার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছে।
কুয়াকাটা সৈকতে ইয়েলো বেলিস সি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিরল ও তীব্র বিষধর সামুদ্রিক সাপ ইয়েলো বেলিড সি স্নেক'র দেখা মিলেছে কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈকতের পূর্ব পাশে ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মো. মাসুম বিল্লাহ সাপটিকে প্রথম দেখতে পান। পরে তিনি স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন অ্যানিমেল লাভার্স অব পটুয়াখালী'র সদস্যদের খবর দিলে তারা বন বিভাগের সহায়তায় সাপটিকে উদ্ধার করে।

মাসুম বিল্লাহ জানান, উদ্ধারকৃত সাপটির পেটের দিকের রঙ হলুদ, উপরিভাগ কালো। সাপটি দেখতে খুবই সুন্দর।

অ্যানিমেল লাভার্স অব পটুয়াখালী'র সদস্য কে এম বাচ্চু বলেন, ঝাউবনের পাশ থেকে সাপটি জীবিত উদ্ধারের পর সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, ইয়েলো বেলিড সি স্নেক তীব্র বিষধর একটি সাপ। বাংলাদেশে এটি সচরাচর দেখা যায় না। বাংলাদেশে সাপের অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায় না।

উদ্ধার করা হচ্ছে সাপটিকে। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশ'র জীববৈচিত্র্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলছেন, গত বছরের জুন মাসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও কুয়াকাটা সৈকতে এই সাপ দেখা গিয়েছিল।

অস্ট্রেলিয়ায় পরিচিত এই সাপটি সম্পর্কে প্রাণ-প্রকৃতিবিষয়ক ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন 'অস্ট্রেলিয়ান জিওগ্রাফিক'-এ বলা হচ্ছে, ইয়েলো বেলিস সি স্নেক এর পুরো জীবন সাগরেই কাটিয়ে দেয়। সাঁতারের জন্য এর শরীর এতটাই উপযুক্ত যে এর শরীর স্থলভাগে চলাফেরার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছে। সাধারণত সাপটি দূরের গভীর সাগরে বাস করে। সামনে-পেছনে দুই দিকেই সাঁতার কাটতে পারে। কখনো কখনো ঝড়ের পর সৈকতে আটকা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

'অস্ট্রেলিয়ান জিওগ্রাফিক'-এর তথ্য অনুসারে, সাপটি আফ্রিকার পূর্ব উপকূল থেকে আমেরিকার পশ্চিম উপকূল পর্যন্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় জলভাগে দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে পার্থ পর্যন্ত মূল ভূখণ্ডের উত্তরের সমুদ্রেও এদের বিচরণ আছে।

উজ্জ্বল হলুদ ও কালো রঙের কারণে সাপটি চিহ্নিত করা সহজ।

Comments