নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ধুকছে পর্যটন

পর্যটন
প্রায় পর্যটকশূন্য কক্সবাজার। ছবি: মোকাম্মেল শুভ/স্টার ফাইল ফটো

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার সরে যাওয়ার পর সারাদেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে এর প্রভাব পড়েছে পর্যটনশিল্পে।

নিরাপত্তাহীনতার কারণে শূন্য দেশের হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কমেছে পর্যটক।

ওই এলাকার রিসোর্ট ও কটেজ মালিকদের সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেববর্মণ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অস্থিতিশীলতা ও আতঙ্কের কারণে গত তিন সপ্তাহে একজন পর্যটকও সাজেকে আসেননি।'

সাধারণত, বর্ষায় সবুজ পাহাড় আর ছোট ছোট জলপ্রপাতের সৌন্দর্য দেখতে পর্যটকরা এখানে এলেও বর্তমান পরিস্থিতি ভ্রমণের অনুকূলে নয়।

'ঢাকা-খাগড়াছড়ির মধ্যে বাস চলাচল এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি' উল্লেখ করে তিনি জানান, সাজেকে অন্তত ১৩০ রিসোর্ট-হোটেল ও ১৬ রেস্টুরেন্ট আছে। এসব হোটেলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পর্যটক থাকতে পারেন।

তিনি আরও জানান, এসব রিসোর্ট ও হোটেলে অন্তত এক হাজার মানুষ কাজ করেন।

তবে বেশিরভাগ কর্মী বেতনসহ ছুটিতে আছেন। এটি তাদের খাবারের খরচ কমাতে সহায়তা করেছে।

মূলত অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দ্রুত পরিবর্তনে মানুষ আতঙ্কিত। এর প্রভাব পড়েছে সাজেক ও পর্যটন ব্যবসায়।

সুপর্ণের মতো সিলেটের টাঙ্গুয়ার হাওরে হাউসবোট সার্ভিস দেওয়া ট্যুর গ্রুপ বিডির মালিক ইমরানুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জুলাই ও আগস্ট এ অঞ্চলে পর্যটনের ভরা মৌসুম।'

তার আশঙ্কা, 'টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শ্রীমঙ্গলের চা বাগান ও জাফলংয়ের জলপ্রপাত অনেক পর্যটককে আকৃষ্ট করলেও দ্রুত পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।'

চলমান পরিস্থিতি তাদের ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে।

তিনি জানান, পর্যটক না থাকায় টাঙ্গুয়ার হাওরে অন্তত ২০০ হাউসবোট অলস সময় পার করছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পর্যটকের অভাবে বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসা নেই বললেই চলে।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রতিদিন ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। দেশের প্রধান পর্যটনস্থল হলেও বর্তমানে এখানে পর্যটক নেই বললেই চলে। তারপরও আমাদের নির্ধারিত খরচ বহন করতে হচ্ছে।'

'জানি না কবে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে। কবে পর্যটক পাব।'

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার সভাপতি রুম্মান ইমতিয়াজ তুষার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় পর্যটক আসছেন না।'

তিনি জানান, গত ২০ জুলাই সরকার প্রথম কারফিউ দিলে অনেক বুকিং বাতিল হয়ে যায়।

কুয়াকাটায় সমুদ্র সৈকতের ছাতা ও বেঞ্চ ভাড়া দেওয়ার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানসহ পর্যটকদের জন্য প্রায় ১৪০ প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের সবারকে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হোটেলে পর্যটক নেই। রক্ষণাবেক্ষণ ও বিদ্যুৎ বিলসহ নানা খরচ মেটাতে মালিকরা হিমশিম খাচ্ছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Constitution should be updated

Dr Kamal Hossain, emeritus president of Gono Forum, yesterday recommended updating the constitution.

22m ago