অধ্যাপক তানজীমকে ছাত্রলীগের ‘জীবন নাশের’ হুমকি, ৮ ছাত্রসংগঠনের প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল। ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানকে ছাত্রলীগ 'জীবন নাশের হুমকি' দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বামপন্থী আটটি ছাত্রসংগঠন।

সংগঠনগুলোর জোটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষকের জীবন নাশে কোনো শিক্ষার্থী হুমকি দিতে পারে সেটা আমাদের ধারণার বাইরে। ছাত্রলীগের এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল আটটি বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। এই জোটে আছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২ মার্চ দিবাগত রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ 'পরিকল্পিতভাবে' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন খানের বিচার চেয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের প্রয়োজনে 'রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায় হবে' এ জাতীয় বক্তব্য দেন। এভাবে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী প্রকাশ্যে কোনো শিক্ষককে জীবন নাশের হুমকি দিতে পারে সেটা আমাদের ধারণার বাইরে।

জোটের নেতারা বলেন, অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই গুটিকয়েক শিক্ষকের একজন যিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের পাশে থেকেছেন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার। ছাত্রলীগের এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হলগুলোতে গেস্টরুম-গণরুম প্রথার বিরুদ্ধে তিনি শুরু থেকেই কথা বলে আসছেন। ছাত্রলীগ বরাবরই তানজীমউদ্দিন খানকে অপছন্দের তালিকায় রাখে এবং এবার ছাত্রলীগের এক কর্মীর ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই চেষ্টাকে প্রতিহত করে এবং এ ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় সত্যিকারের শিক্ষকের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সর্বদা ছিল এবং আছে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ছাত্রলীগের এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। গুজব রটিয়ে তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা বারংবার করে। এজন্য যেকোনো প্রকার নোংরামি করতে তারা প্রস্তুত। এই শক্তিকে রুখে দেওয়ার সময় এখন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের সকল শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ফেসবুকে আত্মহত্যার ইঙ্গিতমূলক একটি পোস্ট দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক এস এম এহসান উল্লাহ। ফেসবুক পোস্টের এক জায়গায় তিনি অধ্যাপক অধ্যাপক তানজীমউদ্দিনের নাম উল্লেখ করেন।

পরে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান ফেসবুকে লেখেন, 'আমার ভাইয়ের কিছু হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগেরও রক্তের মূল্য আছে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায় হবে। জয় বাংলা।' তখন রাতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনের সামনে ঘণ্টা দুয়েকের জন্য অবস্থান নেন।

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

8h ago