নরসিংদী

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বানানো শহীদ মিনার ভেঙে ফেলল দুর্বৃত্তরা

স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় অস্থায়ীভাবে কলাগাছ, বাঁশ, কাঠ ও কাগজ দিয়ে শহীদ মিনারটি স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে নির্মাণ করা হয়েছিল।  সকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদদের স্মরণে ফুল দিতে এসে দেখতে পান অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেশ কিছু অংশ দুর্বৃত্তরা ভোর রাতে ভেঙে ফেলেছে। ছবি: জাহিদুল ইসলাম/স্টার

নরসিংদীর রায়পুরায় কেএসএ পাবলিক স্কুলের অস্থায়ী শহীদ মিনার ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় অস্থায়ীভাবে কলাগাছ, বাঁশ, কাঠ ও কাগজ দিয়ে শহীদ মিনারটি স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে নির্মাণ করা হয়েছিল। 

স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। পরে তারা বাসায় ফিরে যান। সকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদদের স্মরণে ফুল দিতে এসে দেখতে পান অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেশ কিছু অংশ দুর্বৃত্তরা ভোর রাতে ভেঙে ফেলেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, গভীর রাতে পাহারায় কেউ না থাকায় দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।

এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে বিচার দাবি করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষর্থী ও এলাকাবাসী।

স্কুলের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম (১২) বলেন, 'রাত ১২টা পর্যন্ত বসে থেকে বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেছি। সকালে এসে দেখি শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলেছে। এটা দেখার পর মনটাই ভেঙে গেছে। আমরা এর বিচার চাই।'

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সবার আগে আমি সকাল ৭টার দিকে এসে দেখি এটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। যারা রাতে এটি তৈরিতে কাজ করেছেন, তারাও এ অবস্থায় দেখে মর্মাহত। আমি পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি, আশা করি তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।'

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের পরিচালক কবির সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের স্কুলের ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও ১৩ জন শিক্ষক। নিজস্ব শহীদ মিনার না থাকায়, মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিকভাবে কাঠ, বাশ, কাগজ ও কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনারটি তৈরি করেছিলাম। কিন্তু আজ সকালে ফুল দিতে এসে দেখি এটিকে ভেঙে ফেলে রাখা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা আমরা জানতে পারিনি। তবে, আমাদের ধারণা স্বাধীনতা বিরোধী সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। আমরা এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত এবং প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।'

এ ব্যাপারে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজগর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাটি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। কাজটি খুব খারাপ হয়েছে এবং পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জানানো হয়েছে।'

ঘটনাস্থলে আসা রায়পুরা থানার এস আই মাহমুদুল হাসান বলেন, 'স্কুলের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারটি কলাগাছ দিয়ে নির্মাণ করেছিল। শহীদ মিনার প্রধান ফলক দুটি কেটে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। কে বা কারা করেছেন, তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। তবে, লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

6h ago