বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাইকেল চালিয়ে ৮ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসকে সামনে রেখে বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত থেকে বাইসাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৮ নাগরিক। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসকে সামনে রেখে বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত থেকে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৮ নাগরিক।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলা থেকে পর্যটক দলটি বৃহস্পতিবার রাতে পাবনা শহরে পৌঁছায়।

পাবনার দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করে বিকেলে মানিকগঞ্জের উদ্দেশে পাবনা ছেড়ে যায় তারা। পর্যটক দলটি আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি সাইকেল চালিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবেন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা আবার ভারতে ফিরে যাবেন।

পর্যটক দলের প্রধান শৈবাল ব্যানার্জি জানান, বাংলাভাষার প্রতি অকৃতিম ভালবাসা এবং দুই বাংলার মানুষের মধ্যে মেলবন্ধনের কারণেই তারা এ সাইকেল ভ্রমণে বেরিয়েছেন।

পাবনা থেকে মানিকগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় শৈবাল ব্যানার্জি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা দুই বাংলার মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলি, বাংলা আমাদের প্রাণের ভাষা, ভাষাকেন্দ্রিক দুই বাংলায় রয়েছে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন।'

'একটি কাটা তারের বেড়া আমাদের দুই বাংলার ভূখণ্ডকে ভাগ করেছে কিন্তু আমাদের মুখের ভাষা, আমাদের সাংস্কৃতিক মেল বন্ধনকে বিভাজিত করতে পারেনি। দুই বাংলার মানুষের মধ্যকার এই আত্নিক মেল বন্ধনের টানে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের সম্পর্ককে তুলে ধরতেই আমাদের এ উদ্যোগ,' বলেন তিনি।

পর্যটক দলের একমাত্র নারী সদস্য শৈবাল ব্যানার্জির স্ত্রী মহুয়া ব্যানার্জি বলেন, 'শুধু মুখের ভাষা আর সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনই নয়, এপার বাংলা ও ওপার বাংলায় রয়েছে আমাদের পরস্পরের আত্মীয়তা। আত্মার এ সম্পর্ক থেকেই বাংলাদেশের মানুষের মতো বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ২১ ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমরাও গর্বিত।'

বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও দূষণমুক্ত পরিবেশের জন্য সাইকেল চালিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ ভ্রমণে এসেছেন বলে জানান মহুয়া।

তারা জানান, ৮ সদস্যের এ পর্যটক দল বিশ্ব ভালবাসা দিবসে (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী প্রদেশের চন্দননগর থেকে যাত্রা শুরু করেন।

১৫ ফেব্রুয়ারি রানাঘাট হয়ে দর্শনা-আলমডাঙ্গা দিয়ে কুষ্টিয়া প্রবেশ করেন তারা। ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালি হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি দর্শন করে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ঘাটহয়ে নদীপথে পাবনা শহরে প্রবেশ করেন।

শুক্রবার সারাদিন পাবনা শহরের দর্শনীয় স্থান, সুচিত্রা সেনের বাড়ি, পাবনা মানসিক হাসপাতাল, অনুকুল চন্দ্রের জন্মস্থান পরিদর্শন, তারাশ ভবন পরিদর্শনসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করে বিকেলে তারা মানিকগঞ্জের উদ্দেশে পাবনা ছেড়ে যান।

পাবনার কাশিনাথপুর হয়ে কাজিরহাট ফেরিঘাট দিয়ে তারা মানিকগঞ্জে যাবেন। শনিবার মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে রোববারের মধ্যে তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন।

পরিদর্শন দলের প্রধান শৈবাল ব্যানার্জি বলেন, 'প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পৌঁছাবো। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমরা বাংলাদেশের মানুষের সাথে আন্তরিকভাবে মেশার সুযোগ পেয়েছি। সবাই আমাদের আতিথেয়তা দিয়ে বরণ করে নিয়েছে।'

ইন্দবাংলা বাইসাইকেল র‌্যালী নামে এই সংগঠন বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো ভ্রমণ করছে বলে জানান তিনি।

এবারের সাইকেল ভ্রমণে ৮ জনের দলের মধ্যে রয়েছেন ২ জন ব্যবসায়ী ও ৬ জন শিক্ষক।

বাংলাদেশ ভ্রমণে নতুন যেসব সদস্য এবার এসেছেন তারা হলেন, শিক্ষক শ্রীকান্ত মণ্ডল, শিক্ষক প্রণব মাইতি, শিক্ষক প্রসনজিৎ সরকার, শিক্ষক রমজান আলী, ব্যবসায়ী অঞ্জন দাস ও সত্যব্রত ভান্ডারী।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago