একজন বইপ্রেমী পুলিশ কর্মকর্তার গল্প
পুলিশের মধ্যে মানবিকতার বোধ জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে নিজ কার্যালয় ও থানায় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। আবার কর্মস্থল থেকে বিদায় নেয়ার সময়েও উপহার হিসেবে সব সহকর্মীদের দিয়ে গেলেন বই। আদর্শবান পুলিশ হতে তাদের দিলেন বই পড়ার পরামর্শ।
২০২০ সালের আগস্টে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেওয়ার পরপরই আনোয়ার হোসেন শামিম এসব পরিবর্তন নিয়ে আসতে থাকেন। নিজ সার্কেল অফিস এবং এর আওতাধীন দুই থানা- রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে মোট ৩টি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
পুলিশ সদস্যদের ভেতর পাঠ্যাভ্যাস গড়ে তোলার এমন প্রচেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে সংবিধান ও মানবাধিকার নিয়ে ক্লাসও নিতেন আনোয়ার হোসেন শামিম। চেষ্টা করতেন পুলিশের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে। সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র্যাব) বদলি হয়েছেন।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার কনস্টবল আরিফ হোসেন এই পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে বলেন, 'শামিম স্যার যতটা আমাদের সিনিয়র অফিসার ছিলেন, ততটাই ছিলেন আমাদের শিক্ষক। তার চালচলন, জীবনাচরণ এমন যে, তাকে অনুসরণ করলেই একজন পুলিশ সদস্যের পক্ষে পেশাদার ও আদর্শবান পুলিশ হওয়া সম্ভব।'
আরিফ আরও বলেন, 'বিদায়ের সময় স্যার আমাদের বই উপহার দিয়েছেন। স্যারের চাওয়া একটাই, আমরা যেন বেশিবেশি পড়ি এবং পেশাগত ও ব্যক্তিজীবনে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাই।'
গত রোববার তার বিদায় অনুষ্ঠানে সহকর্মীদের বই উপহার দেওয়ার সময় শামিম বলেন, 'আমি চাইলে বিদায়ের সময় আপনাদের হাতে ফুলের গুচ্ছ বা মিষ্টান্ন তুলে দিতে পারতাম। কিন্তু সেসবের বদলে আমি আপনাদের হাতে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম উপহার বই তুলে দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি আমার দেওয়া বইয়ের পাশাপাশি আপনারা নিজেরাও বই কিনবেন, পাঠ্যাভ্যাস তৈরি করবেন।'
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন শামিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি দেখেছি যে যারা বই পড়েন তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে একটা ইতিবাচক প্রবণতা তৈরি হয়। আমাদের মধ্যে সোশ্যাল সাইটগুলোতে আসক্ত হয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা আছে। আমি চাই এটার পরিবর্তে তারা বইয়ের দিকে আসক্ত হোক।'
Comments