পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন
পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। সৈকতে লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে সাগরে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। সৈকতে আজ ঢাকের তালে উৎসবের আমেজ যেমন ছিল, তেমনি ছিল দেবীকে বিদায় জানানোর বেদনা।
আজ বুধবার দুপুর থেকেই পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় ভিড় জমান ভক্তরা। এখানে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার লোক যেমন ছিল, তেমনি ছিল বিসর্জন দেখতে হাজারো দর্শনার্থী। দশমীর আনুষ্ঠানিকতা সৈকতে বিসর্জন শুরু হয় দুপুর আড়াইটায়।
তেল-সিঁদুর পরিয়ে, পান, মিষ্টি মুখে দিয়ে দেবীকে বিদায় জানাতে সৈকতে ভিড় করেন ভক্ত ও অনুরাগীরা। নানা ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এর আগে সকালে ১০ উপাচারে দেবীর বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জন সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। পরে দেবীর চরণে ফুল, সিঁদুর, বেল পাতা ও মিষ্টি দিয়ে বিভিন্ন আচার পালন করে ভক্তরা। নারীরা একে অপরের মাথায় সিঁদুর ছোঁয়ান। দীর্ঘায়ু কামনা করেন পরিবারের সদস্যদের।
বিসর্জন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য পতেঙ্গা সৈকতে কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এর পরও প্রতিমাবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। র্যাব, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহেদ মোহাম্মদ নাজমুন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সাগরে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন। সৈকত ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, 'এ বছর চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান পূজামণ্ডপ জেএম সেন হলসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৮২টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়। পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ধর্মীয় রীতি মেনে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল-২, অভয়মিত্র ঘাট এবং কালুরঘাট সেতু এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছর করোনার কারণে ভক্তরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে পারেনি। এ বছর কোনো বিধি-নিষেধ না থাকা সবাই নির্বিঘ্নে বিসর্জন দিতে পারবে বলে আশা করছি।
Comments