এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে ২৪৬ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ
এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে ৪৬৫ কোটি টাকা মূল্যের ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি বিক্রির প্রমাণ পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।
এসব পণ্য আমদানির বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির কাছে অপরিশোধিত শুল্ক বাবদ ২৪৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এ প্রতিষ্ঠানটি।
গত ২২ আগস্ট বন্ড কমিশনার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে রাজস্ব বাবদ ২৪৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা দাবি করে কারণ দর্শানোর চিঠি দেন।
প্রতিষ্ঠানটি যদি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বন্ড কমিশনারেটের চিঠির সন্তোষজনক জবাব কিংবা শুল্ক পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়।
আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে মধ্যে ফাঁকি দেওয়া শুল্ককর পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বন্ড লাইসেন্স বাতিলসহ মামলা করতে পারবেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে তেল ও চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো বন্ড সুবিধার (হোম কনজাম্পশন) অধীনে আমদানি শুল্ক না দিয়ে তাদের কাঁচামাল বন্দর থেকে ছাড় করতে পারে। তবে শর্ত থাকে এসব পণ্য গুদাম থেকে বাজারজাত করার আগেই এসব শুল্ক পরিশোধ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানটি গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আমদানি করা ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি শুল্ককর পরিশোধ না করেই বাজারজাত করে।
কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইন অনুযায়ী, শুল্ক পরিশোধ ছাড়া কোনো পণ্য বাজারজাত করা যায় না। কোম্পানিটি ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি বিক্রি করেছে। কিন্তু কোনো শুল্ক পরিশোধ করেনি।'
বন্ড কর্মকর্তারা বলেন, 'এসব অনিয়ম ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি অতীতে একই ধরনের অনিয়ম করেছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
এর আগে গত ২০ আগস্ট এনবিআরের আরেকটি শাখা চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনারেট এস আলম গ্রুপের ১৮টি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং লেনদেন তদন্তের জন্য চারটি অডিট টিম গঠন করে।
এ কমিটির সদস্যদের ২০১৯ থেকে শুরু করে বিগত পাঁচ বছরের সব ধরনের আর্থিক লেনদেন এবং বেচাকেনার রেকর্ড পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০ জন শুল্ক কর্মকর্তার সহায়তায় গঠিত এ চারটি টিমকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে একটি বিশদ প্রতিবেদন তৈরি করে কমিশনার বরাবর জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক ও মহাব্যবস্থাপক (কর্পোরেট) মোহাম্মদ আক্তার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Comments