গ্রেনেড হামলার ১৯ বছর, আপিল শুনানি কবে শেষ হবে

দেশের ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্য এ রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন নিম্ন আদালত।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

এখনো শেষ হয়নি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারকাজ। ১৯ বছর আগে ২০০৪ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ঘটে এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। সেদিনের সেই গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং অন্তত ৩০০ জন আহত হয়।

ওই নৃশংস ঘটনায় মৃত্যুর হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশের ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্য এ রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন নিম্ন আদালত।

রায় কার্যকরের আগে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত নথি) ও আপিল আবেদন এখন হাইকোর্টে। বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছরের ৪ ডিসেম্বর শুনানি শুরু করেন।

এখন পর্যন্ত বেঞ্চের ৮০ কার্যদিবসে শুনানি হয়েছে। সবশেষ শুনানি ২৫ জুলাই হয় বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।

আপিল শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) বশির আহমেদ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করছেন। গত ১৬ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'বেঞ্চে মামলার ২২৫ সাক্ষীর মধ্যে ২২৪ জনের বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়েছে।'

সব সাক্ষীর বক্তব্য পেশ করার পর নিম্ন আদালতের রায় বেঞ্চে পড়ে শোনানো হবে বলে জানান তিনি।

ডিএজি বশির আহমেদ আরও বলেন, 'বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি অসুস্থ থাকায় এখন শুনানি চলছে না।'

বিচারপতি যোগদানের পর আবার শুনানি শুরু হবে। তবে কবে তা শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

'২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ করতে কত সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না। তাই কবে চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে তার কোনো সময়সীমা দেওয়া যাচ্ছে না,' যোগ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির।

গত ১০ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে এ মামলার আপিলের শুনানি শেষ করতে আরও ১০-১২ কার্যদিবস লাগতে পারে।

'হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠার মামলার নথির কোর্ট রিডিং চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এটি শেষ করতে আরও এক কার্যদিবস লাগতে পারে,' জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন এবং তারপর রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবেন,' যোগ করেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন বলেন, 'নিম্ন আদালত গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অত্যন্ত সুন্দর রায় দিয়েছেন। আমরা হাইকোর্টের কাছে আবেদন করব যেন নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকে।'

এ মামলায় বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৩ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ডেইলি স্টারকে বলেন, '২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার শুনানি অক্টোবরের আগে শেষ নাও হতে পারে।'

এর কারণ হিসেবে তিনি আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগ ১ সেপ্টেম্বর ছুটিতে যাবে এবং ৮ অক্টোবর খুলবে বলে জানান।

তিনি বলেন, 'হাইকোর্টে আমরা আমাদের মক্কেলদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করব।'

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। যেহেতু আপিল বিভাগের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ পিটিশনের সুযোগ আছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে লন্ডনে থাকা তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক এবং ১১ জন কারাগারে।

আদালত সূত্র জানায়, মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা ৬৩টি আপিল করেছেন এবং সবগুলোই হাইকোর্টে বিচারাধীন।

নিম্ন আদালতের রায়ের ডেথ রেফারেন্স ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে পৌঁছায়। ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট আপিল গ্রহণ করে। একই দিনে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায়ের কিছু অংশ (জরিমানা) স্থগিত করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

6h ago