কুলাউড়ায় আরও ১ ‘জঙ্গি আস্তানা’, গুলি-বিস্ফোরক উদ্ধার

কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের কালাপাহাড়ের গভীর অরণ্যে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আরও একটি 'জঙ্গি' আস্তানা পাওয়ার কথা জানিয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। 

উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের কালাপাহাড়ের গভীর অরণ্যে এ আস্তানায় আজ মঙ্গলবার অভিযান চালায় সিটিটিসি। অভিযানে গুলি ও বিস্ফোরক দ্রব্য জব্দ করা হয়।

সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে জেলা পুলিশের এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দুপুর ১২টায় তারা সেখানে পৌঁছান। ৪ ঘণ্টার বেশি সময় তারা দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে নতুন জঙ্গি আস্তানা খুঁজে পান।

তিনি জানান, সেখানে একটি ঘরের পাশের মাটির নিচ থেকে ৬ কেজি বিস্ফোরক ও ১৪ রাউন্ড পিস্তলের গুলি পাওয়া গেছে। 

প্রায় ৬ ঘণ্টার অভিযান শেষ হয় বিকেল ৪টায়। যৌথ এ অভিযানে সিটিটিসি, সোয়াত, মৌলভীবাজারের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কুলাউড়া থানার পুলিশের ৬০ সদস্য অংশ নেন।

'আস্তানা' শনাক্তের জন্য অভিযানে গতকাল আটক জামিল ও রাহাত মণ্ডলকে সঙ্গে নেওয়া হয়। 

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, সোমবার কর্মধায় স্থানীয় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের সহায়তায় কুলাউড়া থানা পুলিশ ১৭ জনকে আটক করে। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার আটকদের ছবি সিটিটিসি প্রধানের কাছে পাঠান। 

এর আগে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তারকৃতরা নতুন আটকদের পরিচয় চিহ্নিত করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নতুন এই আস্তানার খোঁজ পাওয়া যায় বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, 'আস্তানা আবিষ্কার করেছি, সবকিছু জেনেছি। আসামিদের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'জঙ্গিদের প্রত্যেকেই হুমকি। তাদের মধ্যে ইমাম মাহমুদ বা কারা কারা নেতৃস্থানীয়, সেটা আমরা যাদের ঢাকা নিয়ে গেছি তাদের দিয়ে শনাক্ত করে নিশ্চিত হব।'

কুলাউড়ার কর্মধায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আগে আটক ২ 'জঙ্গি' ও স্থানীয়দের নিয়ে সকালে অভিযান শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত

সিটিটিসির উপকমিশনার এস এম নাজমুল হক বলেন, 'ইমাম মাহমুদের কাফেলা নামে পরিচিত এই জঙ্গিদের সংগঠন পরিচালনায় অর্থের জোগান আসত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে। সংগঠনের সদস্য জামিল একসময় ওমানে থাকতেন। তার সঙ্গে কর্মধার পূর্ব টাট্রিউলির বাসিন্দা কাতারপ্রবাসী রাশিদ আলীর পূর্বপরিচয় ছিল। সেই সূত্রে রাশিদের কাছ থেকে পূর্ব টাট্রিউলিতে ৫০ শতক সরকারি খাসজমি কিনে সেখানে জঙ্গি আস্তানা করা হয়।'

প্রাথমিক তদন্তে এসব বিষয় জানা গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুজ্জামান, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযানে সিটিটিসির সঙ্গে গিয়েছিলেন কর্মধা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আবুল কালাম। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এত গহীন জঙ্গলে জঙ্গিরা ছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি। এ সড়ক দিয়েই আমার বাড়ি, কিন্তু তাদের কোনদিন দেখিনি। অথচ কালাপাহাড়ের আস্তানায় ১৭ জন অবস্থান করছিল।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

10h ago