চিত্রনায়িকা শিমু হত্যা মামলায় স্বামীসহ ২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলায় তার স্বামী শাখাওয়াত আলী নোবেল ও তার বন্ধু এস এম ওয়াই ফরহাদের বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার অভিযোগ গঠন করেছে ঢাকার একটি আদালত।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ঢাকার কেরাণীগঞ্জের আলিয়াপুরে অবস্থিত হজরতপুর সেতুর কাছাকাছি সড়কের পাশে একটি ঝোপের মধ্যে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিমুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আজ কারা হেফাজতে থাকা নোবেল ও ফরহাদকে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের বিচারক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম অভিযোগ পড়ে শোনালে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি জানান।
এর আগে, বিচারক অভিযুক্তদের এই মামলার অভিযোগ থেকে দায়মুক্ত করার আবেদন নাকচ করেন।
বিচারক এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরুর দিন হিসেবে ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি ধার্য করেছেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক ও এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ২ আসামির বিরুদ্ধে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, পারিবারিক ঝগড়ার জেরে শিমুর স্বামী নোবেল তার বন্ধু ফরহাদের সহায়তায় শিমুকে হত্যা করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ বছরের ১৫ জানুয়ারি রাতে ফরহাদের সহায়তায় নোবেল তার গ্রিন রোডের ফ্ল্যাটে শিমুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
হত্যাকাণ্ডের সময় পাশের কক্ষে দম্পতির ১৫ বছর বয়সী কন্যা ও ৭ বছর বয়সী পুত্র ঘুমাচ্ছিল।
১৬ জানুয়ারি সকালে নোবেল ও ফরহাদ দুটি বস্তাকে একত্রে সেলাই করে এর ভেতর শিমুর মরদেহ ঢুকিয়ে রাখেন। তারপর তারা নোবেলের গাড়ির ট্রাংকে শিমুর মরদেহ রেখে মিরপুর, রূপনগর ও আশুলিয়া এলাকায় গাড়ি চালিয়ে বেড়ান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মরদেহ ফেলে দেওয়ার জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়া।
সন্ধ্যায় তারা মরদেহসহ বাসার উদ্দেশে রওনা হন। ফিরে আসার সময় প্রায় রাত ১২টার দিকে তারা মরদেহটিকে কেরানীগঞ্জের আলিপুর সেতুর কাছাকাছি অবস্থিত একটি ঝোপে ফেলে দেন।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, এরপর নোবেল কলাবাগান থানায় গিয়ে তার স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ জানান।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিমুর ভাই হারুনুর রশিদ তার স্বামী নোবেল ও ফরহাদসহ কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর হত্যার সঙ্গে সংযুক্তির অভিযোগে পুলিশ উল্লেখিত ২ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যে প্রাথমিকভাবে ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত দুজন পৃথক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং কীভাবে তারা শিমুকে হত্যা করেন, তার বর্ণনা দেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নোবেল উল্লেখ করেন, তিনি ১৬ জানুয়ারি রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করার পর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
তার বন্ধু জানান, তিনি ভুক্তভোগীকে হত্যা করতে এবং একটি নিরিবিলি স্থানে মরদেহ ফেলে আসতে সহায়তা করেছেন।
Comments