সাভারে সাংবাদিক সোহেল রানার ওপর হামলা

সাংবাদিক সোহেল
সাংবাদিক সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভারে এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আহত সাংবাদিক দৈনিক তৃতীয় মাত্রার সাভার প্রতিনিধি সোহেল রানা বর্তমানে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।  

এ সময় ঘটনাস্থলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার সাংবাদিক আহম্মেদ জীবন উপস্থিত ছিলেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেলা ১২টার দিকে সোহেল ব্যক্তিগত কাজে উপজেলা পরিষদ গিয়েছিলেন। দুপুর ২টার দিকে সেখানে ১০-১২ জন যুবক এসে তার ওপর হামলা চালায়।'

তবে হামলাকারীদের কাউকে তিনি চেনেননি বলে জানান।

'তারা হাতুড়ি দিয়ে সোহেলের ঘাড়ে আঘাত করে এবং এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় সোহেলের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের বাসভবন চত্বরে প্রবেশ করে,' বলেন আহম্মেদ জীবন।

পরে পুলিশে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সোহেলকে উদ্ধার করে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

অবস্থা গুরুতর হলে সেখান থেকে সোহেলকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানতে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইএফপিও) ডা. সায়েমুল হুদা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোহেল মাথায়, ঘাড়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।  মাথার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তিনি বমি করছিলেন।'

এনাম মেডিকেলে ভর্তি আহত সাংবাদিক সোহেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হামলাকারী যুবকদের মধ্যে মহসিন নামে একজনকে চিনতে পেরেছি। এছাড়া কাউকেই চিনতে পারিনি।'

হামলার ঘটনার বিবরণ দিয়ে সোহেল বলেন, 'আমি একটি ফটোকপির দোকানে বসেছিলাম। এ সময় মহসিন নামের ওই যুবক আমাকে ১৫ই আগস্টের সংবাদ করার কথা বলে দোকান থেকে বের হতে বলে। আমি দোকান থেকে বের হলে  ১০-১২ জন যুবক আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় একজন হাতুড়ি দিয়ে আমার ঘাড়ে আঘাত করে।'

'এক হামলাকারী ছুরি বের করেন। জীবন বাঁচাতে আমি দৌঁড়ে উপজেলা পরিষদ ভবনে আশ্রয় নেই,' যোগ করেন তিনি। 

কী কারণে হামলা হতে পারে জানতে চাইলে সোহেল বলেন, 'কয়েকদিন আগে সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সোহাগের নেতৃত্বে এক হামলার ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করি। এরপর সোহাগের লোকজন আমি ও আমার এক সহকর্মীর ছবি ব্যাঙ্গ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়।  এ ঘটনায় আমি গতকাল সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এ জন্য তারা আমার ওপর হামলা করেছে।'

সোহেল আরও বলেন, 'সোহাগ উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারী। আর হামলাকারীরা হামলার পর চেয়ারম্যানের বাসভবনে প্রবেশ করেছে। উপজেলা পরিষদে সিসিটিভি আছে। পুলিশ ফুটেজ পর্যালোচনা করলে হামলার সঙ্গে কারা জড়িত বেরিয়ে আসবে।'

যোগাযোগ করা হলে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার কিছুই জানি না। আপনার কাছ থেকে শুনলাম।' 

হামলার পর হামলাকারীরা আপনার বাসভবনে প্রবেশ করেছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, 'ভিডিও ফুটেজ আমাকে পাঠান। দেখি চিনতে পারি কি না?'

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হামলায় আহত সাংবাদিককে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত বিষয়টি জানতে পুলিশ কাজ করছে। আহত সাংবাদিকের অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখব।'

যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়ে থাকলে তিনি পুলিশের সাপোর্ট পাবেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

1h ago