সিলেটের বন্যায় গাজীপুরে কাঁঠাল ব্যবসায় ধস

সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে কাঁঠাল। ছবি: স্টার

সিলেটে বন্যার কারণে গাজীপুরের কাপাসিয়া ও শ্রীপুরে কাঁঠালের ব্যবসায় ধস নেমেছে। ৫০ টাকা দামের কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।

এতে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে ও বাগানে পড়ে আছে অসংখ্য কাঁঠাল।

গত এক সপ্তাহে কাপাসিয়ার আমরাইদ, রায়েদ, টোক বাজার ও শ্রীপুরের জৈনা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রায়েদ ইউনিয়নের কৃষি ব্লক সুপারভাইজার জাহিদ আকন্দ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গাজীপুরের কাঁঠাল মূলত সিলেট ও ঢাকায় যায়। সম্প্রতি সিলেটে বন্যার কারণে গাজীপুরের কাঁঠালের চালান আটকে গেছে। এতে গাজীপুরের কাঁঠালের ব্যবসায় ধস নেমেছে।'

আমরাইদ গ্রামের চাষি মো. লিটন সিকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বাগানে শতাধিক কাঁঠাল গাছ আছে। এবার বাগান থেকে ৯০টি গাছের কাঁঠাল ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। গত বছর একই বাগানের কাঁঠাল বিক্রি করে পেয়েছিলাম ৮০ হাজার টাকা।'

বিক্রি না হওয়ায় গাছ থেকে শত শত কাঁঠাল পচে গলে নিচে পড়ছে বলে জানান তিনি।

কাপাসিয়া গ্রামের চাষি মামুন মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে যে দু-পয়সা আয় হতো, এবার তাও হলো না। সিলেটের বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে।'

কাঁঠাল সংরক্ষণে কোনো হিমাগার নেই। ছবি: স্টার

লোহাদী গ্রামের চাষি কামাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল গাছ থেকে ৮০০ কাঁঠাল কেটেছি। এর মধ্যে ৩০০ কাঁঠাল পচা। তাই ফেলে দিয়েছি। বর্ষায় সিলেট-সুনামগঞ্জে কাঁঠাল নিয়ে যাওয়া যায় না। গাড়ি থেকে কাঁঠাল নামানো যায় না।'

কাপাসিয়া উপজেলার দরগা বাজার এলাকার কাঁঠাল ব্যবসায়ী কফিল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাঁঠাল কাটতে দৈনিক খরচ এক হাজার টাকা। গাড়ি ভাড়া দিতে হয় ২২ হাজার টাকা। বন্যার কারণে কাঁঠাল নিয়ে সিলেটের বাজারগুলোতে যেতে পারছি না। এজন্য কাঁঠাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছি।'

'দুই সপ্তাহ আগেও আমরাইদ এলাকা থেকে কাঁঠালের বড় গাড়ি যেত ১৬টি, এখন যায় চার-পাঁচটা', বলেন তিনি।

কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের কোনো হিমাগার নেই, ফলে কাঁঠাল সংরক্ষণেরও উপায় নেই। একটি হিমাগার স্থাপনের ব্যবস্থা হলে কাঁঠালের পাশাপাশি অন্যান্য মৌসুমি ফলও সংরক্ষণ করা যাবে। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির হাত থেকে তারা বেঁচে যাবেন।

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাঁঠাল সংরক্ষণে হিমাগার নেই। তবে পাইলটিং প্রকল্প আছে। বরাদ্দ পেলে একটি কাঁঠাল প্রসেসিং সেন্টার স্থাপন করা হবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

10h ago