প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় সিলেট-সুনামগঞ্জে ঈদ আনন্দে ভাটা

ছবিটি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে তোলা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং সীমান্তবর্তী মেঘালয় ও আসাম অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও জলাবদ্ধতায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী দুই জেলার ঈদ আনন্দে ভাটা পড়েছে।

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে দুই জেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল। সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

আজ সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ শহরে ৩৬৫ মিলিমিটার, সিলেট নগরীতে ২৮৫ মিলিমিটার, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে ২৫২ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়ের গড়ে ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়াও দুই জেলার অন্যান্য অংশেও প্রবল ও ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

একই সময়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

ভারী বর্ষণে সিলেট জেলার সবকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছেন অন্তত দুই লাখ মানুষ। এ ছাড়াও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

সিলেট নগরীতেও ভারী বর্ষণে শাহজালাল উপশহর, দরগাহমহল্লা, কাজলশাহ, বাগবাড়ি, পাঠানটুলাসহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছাড়াও বিমানবন্দর সড়ক, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও রয়েছে জলমগ্ন।

সিলেটের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহাসিক ঈদের জামাত শাহী ঈদগাহে মাত্র শখানেক মানুষের উপস্থিতিতে বৃষ্টির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের নামাজ।

নগরীর আম্বরখানা এলাকার বাসিন্দা জাইন আহমেদ বলেন, 'রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমরা ঈদের নামাজ পড়তে কোথাও যেতে পারিনি। পরে এলাকার মসজিদেই ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কোরবানি দিতেও শুকনো জায়গার অভাবে হিমশিম খেয়েছি।'

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, আজ বিকেল ৩টায় সুরমা নদী সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার উপরে এবং জৈন্তাপুরের সারিঘাটে সারি নদী বিপৎসীমার মাত্র ২ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক। ছবি: শেখ নাসির/ স্টার

এদিকে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল, বিশেষ করে ছাতক, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলা ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে।

আজ ভোর ৬টায় সুরমা নদী সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় বিপৎসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার এবং সুনামগঞ্জ শহরে ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তার উজান (ভারতের মেঘালয় ও আসাম) অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সময়ে এ অঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, গোয়াইন, জাদুকাটা, ঝালুখালি, মনু ও খোয়াই নদীর পানি দ্রুত বাড়বে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিপৎসীমা অতিক্রম করবে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago