তীব্র তাপদাহ: দুধ উৎপাদন কমেছে ২৫ শতাংশ, খরচ বেড়েছে ১০-১৫ শতাংশ

তীব্র তাপদাহ: দুধ উৎপাদন কমেছে ২৫ শতাংশ, খরচ বেড়েছে ১০-১৫ শতাংশ
গরমে সুস্থ রাখতে গরুকে বারবার গোসল করাতে হচ্ছেন। ছবিটি গতকাল পাবনার ফরিদপুর উপজেলার মো. সাইফুল ইসলামের খামার থেকে তোলা | ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

চলমান তাপপ্রবাহে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাবনা ও সিরাজগঞ্জের খামারিরা। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যারা গরু পালন করছেন, তারাও রয়েছেন শঙ্কায়।

পাবনার সদর থানার জোতআদম ও ফরিদপুর উপজেলার একাধিক গ্রাম এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রামখারুয়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কমে গেছে দুধ উৎপাদন। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে গবাদি পশু।

জোতআদম গ্রামের খামারি লুৎফর রহমানের সম্বল বলতে চারটি গরু। লুৎফর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঈদকে সামনে রেখে বাড়িতে চারটি গরু পালন করছি। এই গরমে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন অন্তত তিনবার গোসল করাতে হচ্ছে। প্রতিটি গরুর জন্য একটি করে ফ্যান চালাচ্ছি। বিদ্যুৎ চলে গেলে পরিবারের সবাই মিলে পাখা দিয়ে বাতাস করি।'

তিনি বলেন, 'এই সময় গরুর মোটাতাজা হয়ে ওঠার কথা, সেখানে গরু শুকিয়ে যাচ্ছে।'

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গরমের সঙ্গে সঙ্গে গরুর পালনের খরচও বেড়েছে। অতিরিক্ত পানি খেতে দিতে হচ্ছে, গোসল করাতে হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি শ্রমিক লাগছে।'

সাইফুলের খামারে ৬০টি গরু রয়েছে। প্রতিদিন ছয় থেকে সাতজন রাখাল কাজ করছেন।

পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে বলেও জানান তিনি। সাইফুল বলেন, 'প্রতি বস্তা গমের ভুষি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সব মিলিয়ে সপ্তাহে প্রতিটি গরুর পেছনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত খরচ বেড়েছে।'

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রামখারুয়া গ্রামের কৃষক রাজু আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তীব্র তাপদাহে গরুর দুধ উৎপাদন কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ২০ থেকে ২৫ কেজি দুধ পাওয়া যেত, এখন ১৮ থেকে ২০ কেজির বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।'

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তীব্র তাপদাহে গরুর দুধ উৎপাদন কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। এছাড়া উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। এতে করে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা।'

ইমরান বলেন, 'বাংলাদেশে যেসব প্রজাতির গরু পালন করা হয়, সেগুলো খরা সহিষ্ণু নয়। যে কারণে অতিরিক্ত তাপে গবাদি পশুর শরীরে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।'

তাপপ্রবাহের মধ্যে গবাদি পশুর বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক শাহিনুর আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খামারের ঘরগুলো ঠান্ডা রাখাতে হবে। গরুকে প্রতিদিন একাধিকবার গোসল করাতে হবে, কোনোভাবেই যেন গরুর গায়ের তাপমাত্রা বেড়ে না যায়।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP hosts discussion on first anniversary of July uprising

Leaders recall sacrifices, call for unity at Dhaka gathering

19m ago