ইটভাটার ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট: ক্ষতিপূরণ পাননি ৫৯ কৃষক

ক্ষতিপূরণ বুঝে না পাওয়া কৃষকদের একাংশ। ছবি: স্টার

দুটি ইটভাটার ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষতিপূরণের দাবিতে পথে নেমেছিলেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ও আদিতমারী উপেজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩ গ্রামের ৯৬ জন কৃষক।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটি তালিকা করে সদর উপজেলা প্রশাসন। তাদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়।

কিন্তু তালিকায় থাকা কৃষকদের মধ্যে ৩৭ জনকে ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হলেও বাকিরা তা পাননি।

গতকাল রোববার ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই ইটভাটা মালিকের দেওয়া ৩ লাখ টাকা ওই ৩৭ কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার কারণে মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর ও জিরামপুরের ৭৭ জন এবং দুর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া গ্রামের ১৯ জন কৃষকের ২৫০ বিঘা জমির ধান ও ভুট্টার ক্ষতি হয়। গত ১৭ এপ্রিল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এর প্রতিবাদে ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। সে সময় স্থানীয় জনপ্রিতিনিধি ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে গন্ধমরুয়া গ্রামের কৃষক নাসিম উদ্দিন (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ইটভাটার ধোঁয়ায় তার ১ বিঘা জমির বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, 'গত বছর আমি এই জমি থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছিলাম। এ বছর পেয়েছি মাত্র ৬ মণ। কিন্তু তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আমাকে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়নি।'

একই গ্রামের আরেক কৃষক শহিদুল ইসলামের দাবি, ধোঁয়ার কারণে তারও ১ বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছর একই জমি থেকে ১৯ মণ ধান পেলেও এবার পেয়েছেন ৫ মন।

কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে হতাশ ওই কৃষক বলেন, 'আমাকে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হযনি। ক্ষতিপুরণ পাবো কিনা তাও জানিনা।'

অন্যদিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সাড়ে ৮ হাজার টাকা বুঝে পাওয়া আবুল কালাম জানান, ক্ষতির তুলনায় তার প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ খুবই কম। তার ভাষ্য, গত বছর তিনি তার ১ একর জমি থেকে ধান পেয়েছিলেন ৬৯ মন। এবার পেয়েছেন মাত্র ১২ মণ।'

এ ব্যাপারে মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বক্তব্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযুক্ত ইটভাটা মালিকদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে নেওয়া ৩ লাখ টাকা কৃষকদের মাঝে বণ্টন করা হয়েছে। যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদেরকেই ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে লারমনিরহাট সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা মাসুম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রথমদিকে করা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হয়। তাতে দেখা যায় কিছু কৃষকের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তাই তারা ক্ষতিপূরণ পাননি।'

Comments

The Daily Star  | English

India curbs import of Bangladeshi jute, woven fabrics, yarn

However, the products will be allowed to be imported only through Nhava Sheva seaport in Maharashtra

1h ago