‘আগুন নেভানোয় সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে পানি ও উৎসুক জনতা নিয়ে’

সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কৃষি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে পানি নিয়ে। পানির পর্যাপ্ত সোর্স না থাকায় হিমশিম খেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে। এছাড়া আগুন নির্বাপনে মার্কেটে কোনো ধরনের ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর কৃষি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, কৃষি মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিন ভাগ আগুন ধরে যায়। আমরা চেষ্টা এই মার্কেটের ভেতরেই যেন আগুনটা সীমাবদ্ধ থাকে। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুনটাকে একটা জায়গায় কনফাইন করতে পেরেছে। ‌এবং সীমাবদ্ধতার পরে আমরা এখন যে কাজটা করছি আগুনটা নির্বাপনের চেষ্টা করছি। বিভিন্ন সোর্সে পৌঁছে আগুন নির্বাপন করতে আমাদের একটু সময় লাগবে। তবে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে আমাদের হেডকোয়ার্টারে মার্কেটের বিভিন্ন প্রতিনিধিকে ডেকে অনেকবার আগুনের বিষয়ে আলোচনা করেছি, ওয়ার্কশপ করেছি। আমরা মার্কেটের যারা মালিকপক্ষ, সভাপতি এবং সেক্রেটারি তাদের ডেকে আমরা বুঝিয়েছি। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং ওনাদের করতে হবে।

তবে এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ইকুইপমেন্টই ছিল না বলে জানান এই ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, কোনো এক্সটিংগুইশার অথবা কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সব থেকে বেশি বেগ পেয়েছি পানির সোর্স নিয়ে। এখানে বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে পানির সোর্স রয়েছে কিন্তু পর্যাপ্ত নয়। এবং খুব দ্রুত আমাদের গাড়ির পানি শেষ হয়ে যায় এবং আমরা বিশেষ পানিবাহী গাড়ি এনে এবং আমরা অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায়, ঢাকা ওয়াসার সহায়তায় এবং বিভিন্ন আর্মড ফোর্সেসের সহায়তায় আমরা এই কাজগুলো করি।

সেইসঙ্গে উৎসুক জনতার কারণে আগুন নেভাতে সমস্যা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, একই সাথে এটাও বলতে চাই আমাদের এই আগুন নেভানোর এত সময় লাগার আরেকটা বড় কারণ ছিল ক্রাউড। ক্রাউড কন্ট্রোল করতে আমাদের পুলিশ, বিজিবি খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ক্রাউডের কারণেই আমাদের এত সময় লেগেছে। যদিও সাধারণ মানুষ চেষ্টা করতে চায় আমাদের সাহায্য করার জন্য। কিন্তু আদতে এতে অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

আগুনের সূত্রপাত নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এটা জানার জন্য। তবে যতটুকু বুঝতে পারছি এটা কোনো একটা মুদির দোকানের যে অংশটা যেখানে বিভিন্ন মুদির দোকান আছে ওই অংশ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। এটা শর্ট সার্কিট নাকি কয়েলের আগুন, অথবা কোনো সিগারেটের বা কেউ কি লাগিয়ে দিয়েছে এই বিষয়গুলো আমরা তদন্তের মাধ্যমে জানাতে পারব।

এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত নাই। ছোটখাট আহত আছে, যারা আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করেছে। কিন্তু বড় কোনো ক্যাজুয়ালিটি নেই।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এই মার্কেট আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করাই আছে। এখানে যে পরিমাণ বিদ্যুতের লোড যাওয়ার কথা ডিপিডিসির প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি যে কিলোওয়াট এখানে ৩০০ থেকে ৪০০ কিলোওয়াট মতো আছে কিন্তু এখানে তার দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বিদ্যুত ভেতরে প্রবেশ করছে। অর্থাৎ লোড যেটা হওয়ার কথা তার চেয়ে দ্বিগুণ বিদ্যুৎ এখানে ব্যবহার হচ্ছে। অর্থটা যে কোনো যে তারে ক্যাপাসিটি কম সেই তারে যদি বেশি ক্যাপাসিটির বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তাহলে শর্ট সার্কিট হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু অনেকাংশে থাকে। তদন্ত সাপেক্ষে এগুলো আমরা সব বলতে পারব।

 

Comments

The Daily Star  | English

Exporters fear losses as India slaps new restrictions

Bangladesh’s exporters fear losses as India has barred the import of several products—including some jute items—through land ports, threatening crucial trade flows and millions of dollars in earnings.

3h ago