‘চোখের সামনে সব পুড়ে গেল’

কৃষি মার্কেটে আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম। ছবি: শাহীন মোল্লা/ স্টার

'মাত্র তিন মাস আগে সব শুরু করেছিলাম। ধার দেনা করে, বড় ভাইয়ের সারা জীবনের সঞ্চয়ও ছিল। সব চোখের সামনে পুড়ে গেল।' কথাগুলো বলে চিৎকার করে কাঁদছিলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতের আগুনে অন্যান্য অনেক দোকানের মতো সাইদুলের 'মা বস্ত্রালয়'ও পুড়ে গেছে। রাতেই আগুন লাগার খবরে ছুটে এসেছেন। চেষ্টা করেছিলেন দোকানটা বাঁচাতে কিন্তু পারেননি।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দোকানে টানা ২২ বছর কর্মচারী ছিলেন তিনি। কোনোদিন নিজের দোকান হবে ভাবেননি। মাত্র তিন মাস আগে ভাইয়ের সঞ্চয়, জমানো টাকা আর ব্যাংক এনজিও, মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে দোকান নিয়েছিলেন।

'রাতে খবর পেলাম আগুন লেগেছে। সাথে সাথে ছুটে আসছি। কোনোমতে দোকান থেকে ছোট একটা বস্তা বের করতে পারলেও ধোঁয়ার কারণে আর কিছুই করতে পারিনি। দোকানে ৩০ লাখ টাকার মাল ছিল, সব পুড়ে গেল,' বিলাপ করে বলছিলেন সাইদুল।

বলেন, 'ভাই আট বছর ওমানে ছিলেন। তার জমানো ১০ লাখ টাকা এই দোকানে বিনিয়োগ করেছেন। নিজের জমানো ৫ লাখ টাকা আর ঋণের টাকায় দোকান ছিল। সবে মাত্র স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন। সব শেষ হয়ে গেল। এখন ভাইকে কী জবাব দেব, ঋণের টাকা কীভাবে ফেরত দেব।'

কথা হয় আরেক ব্যবসায়ীর ইমাম হাসানের সঙ্গে। কৃষি মার্কেটে তার দুটি দোকান তিশা ও খোকন জেনারেল স্টোর। দুটিই পুড়ে গেছে।

মার্কেটের পাশে টিক্কাপাড়ায় থাকেন ইমাম। রাতে পৌনে ৪টায় খবর পেয়েই ছুটতে ছুটতে আসেন। কলাপসিবল গেইট খুলে ঢুকলেও দোকানের মালামাল বের করতে পারেননি।  

মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচাবাজার মালিক সমিতির নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ হোসেন জানান তার তিনটা দোকানই পুড়ে গেছে। তিন দিক থেকেই আগুন ছিল। তিনি বলেন, আগুনের সূত্রপাত আমরা জানি না, তবে নাশকতা হয়ে থাকতে পারে কি না সেই আশঙ্কাও তারা উড়িয়ে দিতে পারছেন না।

ভোররাতে লাগা আগুন পাঁচ ঘণ্টার বেশি পার হলেও এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ করছেন। মোতায়েন আছে বিজিবি ও র‍্যাব। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পানি শেষ হয়ে গেলে বিমান বাহিনী ৪ গাড়ি পানি নিয়ে আসে। সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

5h ago