আমাকে অপহরণ করে হত্যা করতে চায়: ইমরান খান

আজ বুধবার নিজ বাসভবন থেকে ওয়েবলিংকের মাধ্যমে বক্তব্য দেন ইমরান খান। ছবি: ভিডিও থেকে স্ক্রিণশট
আজ বুধবার নিজ বাসভবন থেকে ওয়েবলিংকের মাধ্যমে বক্তব্য দেন ইমরান খান। ছবি: ভিডিও থেকে স্ক্রিণশট

আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে পুলিশ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সভাপতি ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে তার জামান পার্কের বাসস্থানে উপস্থিত হলেও কর্মী-সমর্থকদের বাধায় এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। আজ পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আধাসামরিক সংস্থা। 

আজ বুধবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, পুলিশকে সহায়তা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের আধাসামরিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা পাঞ্জাব রেঞ্জার্সের একটি বড় দল জামান পার্কে পৌঁছেছে।

পুলিশ এ মুহূর্তে পিটিআই কর্মীদের জামান পার্ক থেকে ছত্রভঙ্গ করতে শেল বর্ষণ করছে।

রেঞ্জার বাহিনী অভিযানে যোগ দেওয়ার পর ইমরান বেশ কয়েকটি টুইটার বার্তা দেন। তিনি দাবি করেন, পুলিশ তাকে অপহরণ করে হত্যা করতে চায়:। তিনি বলেন, 'এখানে মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাকে অপহরণ করে হত্যা করা', কারণ পুলিশ এখন 'তাজা গুলি ছুঁড়ছে'।

গতকাল মঙ্গলবার পিটিআই সমর্থকদের সঙ্গে রাতভর সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ৩৩ সদস্য আহত হন। পুরোটা সময় ইমরান খান তার বাসস্থানেই ছিলেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

ইমরানের বাসার কাছে পুলিশ রাতভর কর্মীদের উদ্দেশ্যে টিয়ার গ্যাস ছুঁড়েছে এবং প্রত্যুত্তরে কর্মীরা তাদের উদ্দেশ্যে পাথর ছুঁড়ে মেরেছে।

মঙ্গলবার আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে পুলিশের একটি বড় দল ইমরানের বাসার আশেপাশের পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। তবে উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা পুলিশকে ইমরানের বাসার ভেতরে ঢোকার সুযোগ দেয়নি।

ইসলামাবাদের হাই কোর্ট পিটিআইর রিট আবেদন গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। এই আবেদনে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। ইমরানের আইনজীবীরা মঙ্গলবার এই আবেদন করেন এবং আদালতকে একই দিনে এ বিষয়ের শুনানি আয়োজনের দাবি জানান।

জামান পার্কের বাসভবনে ইমরানকে ঘিরে রেখেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: পিটিআইর টুইট
জামান পার্কের বাসভবনে ইমরানকে ঘিরে রেখেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: পিটিআইর টুইট

তবে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলে, আবেদনের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সংযুক্ত নেই। হাইকোর্টের বিচারক আমীর ফারুক এই আপিল ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আপত্তির শুনানি আয়োজন করবেন।

ইমরান তার টুইটে বলেন, 'প্রশাসন, বিশেষত যারা নিজেদের 'নিরপেক্ষ' দাবি করেন, তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন: এটাই কী আপনাদের নিরপেক্ষতার ধারণা, যখন রেঞ্জাররা সরাসরি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী ও নেতৃত্বের মোকাবিলা করছে, যখন তাদের নেতার বিরুদ্ধে অবৈধ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং যখন মামলা ইতোমধ্যে আদালতে আছে, এবং যখন এই অপরাধীদের সরকার তাকে অপহরণ ও খুব সম্ভবত হত্যা করার চেষ্টা চালাচ্ছে?'।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, 'অরাজকতা এড়াতে' তিনি একটি মুচলেকায় সাক্ষর করেছেন। তার আইনজীবী এ নথি তাকে গ্রেপ্তার করতে আসা ইসলামাবাদ পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন বলে জানান ইমরান।

'ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৭৬ ধারা অনুযায়ী, এ ধরনের মুচলেকা দেওয়া হলে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে না', দাবি করেন ইমরান।

ইমরান আরও দাবি করেন, পুলিশের ডিআইজি এই মুচলেকা ধর্তব্যে নিতে রাজি হননি, কারণ তাকে গ্রেপ্তার করা 'লন্ডন পরিকল্পনার' অংশ।

'লন্ডন পরিকল্পনায় বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, ইমরান খানকে কারাগারে দেওয়া হবে, পিটিআইকে পরাজিত করা হবে এবং নেওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে আনা সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে। আমাকে কারাগারে নেওয়া লন্ডন পরিকল্পনার অংশ। এর সঙ্গে আইনের কোনো সম্পর্ক নেই এবং আমি কোনো অপরাধ করিনি', দাবি করেন পিটিআই প্রধান।

পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিচালক ড. উসমান আনোয়ার মঙ্গলবার পিটিআই বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলেন, তারা ইমরান খানকে গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আরও সহিংস ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে সরকারি সম্পদের ক্ষতি করা ও পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

উসমান উল্লেখ করেন, ইসলামাবাদ পুলিশ ডিআইজি শাহজাদ বুখারির (আইসিটি অপারেশন্স) নেতৃত্বে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে লাহোরে তার বাসভবনে পৌঁছায়। মঙ্গলবার অতিরিক্ত দায়রা জজ জাফর ইকবাল তার বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

3h ago