তাইওয়ানের আকাশে চীনের ৫৭ উড়োজাহাজ, সমুদ্রে ৪ নৌযান

পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন এইচ-৬ বোমারু বিমান তাইওয়ানের দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে উড়ে যায়। ফাইল ছবি: রয়টার্স
পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন এইচ-৬ বোমারু বিমান তাইওয়ানের দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে উড়ে যায়। ফাইল ছবি: রয়টার্স

 

তাইওয়ান দ্বীপের কাছাকাছি অঞ্চলে ১ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো চীন সামরিক মহড়া পরিচালনা করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তাইপে।   

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

চীন, তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে এবং দেশটি সম্প্রতি এই দাবির স্বপক্ষে সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, তারা তাইওয়ানের সমুদ্র ও আকাশসীমার আশেপাশে 'সমন্বিত যুদ্ধ-প্রস্তুতি ও প্রকৃত সামরিক মহড়া' পরিচালনা করেছে। এ ক্ষেত্রে সমুদ্র ও স্থল থেকে আক্রমণের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।

রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে চীনের সামরিক বাহিনী জানায়, এই মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল সমন্বিত আক্রমণ সক্ষমতা পরীক্ষা করা এবং 'বহিশক্তি ও তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উসকানিমূলক আচরণের বলিষ্ঠ জবাব দেওয়া'।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে চীনের অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' বলে অভিহিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ মহড়ার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্ব তাইওয়ান ও চীন উভয়েরই।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে আরও জানানো হয়য়, এ ক্ষেত্রে তাইওয়ানের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। তারা সংঘর্ষ বাড়াবে না বা কোনো ধরনের মতভেদকেও উসকে দেবে না। কিন্তু একইসঙ্গে তারা তাদের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। 

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা দ্বীপের চারপাশে চীনের ৫৭টি উড়োজাহাজ ও ৪টি নৌযান শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে ২৮টি উড়োজাহাজ তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে।

২৮টি উড়োজাহাজের মধ্যে কয়েকটি তাইওয়ান প্রণালীর অনানুষ্ঠানিক বিভাজন রেখা পেরিয়ে যায়, যার মধ্যে ছিল এসইউ-৩০ ও জে-১৬ জঙ্গি বিমান। এছাড়াও, ২টি পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন এইচ-৬ বোমারু বিমান তাইওয়ানের দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে উড়ে যায়।

তাইওয়ান দাবি করেছে, গত মাসের শেষ দিকে একই রকম আরেক মহড়ায় চীনের ৪৩টি উড়োজাহাজ অংশ নেয়।

গত ৩ বছর ধরে চীন তাইওয়ানের জল ও আকাশসীমার কাছাকাছি নিয়মিত সামরিক মহড়ার আয়োজন করে আসছে।

মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস এর তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আগস্টে তাইওয়ান সফরে গেলে চীন পুরো তাইওয়ান দ্বীপের চারপাশে বড় আকারে সামরিক মহড়া চালায়।

এরপর থেকে চীনের সতর্কবাণী উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্র দেশের আইনপ্রণেতারা নিয়মিত তাইওয়ান সফরে যাচ্ছেন।

চীনের দাবি কখনোই মেনে নেয়নি তাইওয়ান। তাদের বক্তব্য, শুধুমাত্র দ্বীপটির ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ নির্ধারণ করতে পারে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে।

বিভিন্ন সময় তাইওয়ানের প্রতি মার্কিন সমর্থনে বেইজিং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, বিশেষত, অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে।

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো, যুক্তরাষ্ট্রেরও তাইওয়ানের সঙ্গে কোন আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে দেশটি তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহকারী ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সবচেয়ে বড় সমর্থক।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka cannot engage with non-state actors: foreign adviser

Md Touhid Hossain also emphasised that peace and stability in the region would remain elusive without a resolution to the Rohingya crisis

34m ago