ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগুনে ‘ঘি ঢেলেছেন’ ট্রাম্প: চীন

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাতের আগুনে 'ঘি ঢেলেছেন' যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, এমন অভিযোগ এনেছে চীন।
আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মূলত ইরানের নাগরিকদের তেহরান ছেড়ে যেতে বলার পরই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে চীন।
কয়েক দশকের শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্ক ও পরোক্ষ যুদ্ধের পর গত শুক্রবার ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের দাবি, ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে কারণেই তারা এই হামলা শুরু করেছে।
তবে তেহরান বরাবর দাবি করে এসেছে, শুধু শান্তিপূর্ণ কাজেই তাদের পরমাণু প্রকল্প ব্যবহার করা হবে।
টানা পাঁচ দিন ধরে চলছে দুই পক্ষের সংঘাত। এতে বড় আকারে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে চলমান পরমাণু চুক্তির আলোচনা ভেস্তে গেছে। রোববার ওমানে ষষ্ঠ দফার আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়। তবে এখনো ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরানোর চেষ্টা করছেন মার্কিন নেতা।
পাশাপাশি ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক ব্যতিক্রমী সতর্কবার্তা দেন। তিনি পোস্ট করেন, 'সবার উচিত অবিলম্বে তেহরান ছেড়ে যাওয়া।'
ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেন, 'আগুনে ঘি ঢালা, হুমকি দেওয়া, চাপ সৃষ্টি এসবের মাধ্যমে সংকট নিরসন সম্ভব নয়; বরং এগুলো সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তুলবে ও ছড়িয়ে দেবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ইসরায়েলের ওপর যেসব দেশের বিশেষ প্রভাব রয়েছে, চীন তাদেরকে পরিস্থিতি অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে উত্তেজনা কমানো ও এই সংঘাতকে আরও ছড়িয়ে পড়া থেকে প্রতিহত করা।'
পাশাপাশি ইসরায়েলে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের 'যত দ্রুত সম্ভব' দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলে চীনের দূতাবাস।
দূতাবাস সামাজিক মাধ্যম উইচ্যাটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে উল্লেখ করে, 'ইসরায়েলে অবস্থিত চীনের (কূটনীতিক) মিশন দেশটির নাগরিকদের অবিলম্বে স্থল সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ইসরায়েল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে পূর্বশর্ত হলো, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তবেই দেশত্যাগ করা উচিত।'
'জর্ডান অভিমুখে যাওয়াই সবচেয়ে ভালো হবে', পোস্টে আরও বলা হয়।
দূতাবাস হুশিয়ারি দেয়, এই সংঘাতের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছে।
'অসংখ্য বেসামরিক অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। নিহত বেসামরিক মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে এবং সার্বিকভাবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।'
Comments