হারিয়ে যাচ্ছে সৈয়দ আবুল মকসুদদের ‘সরলপথ’

সৈয়দ আবুল মকসুদের পথ চেনা সহজ হবে, উনার পক্ষপাতটা বোঝার মধ্যে দিয়ে। হ্যাঁ উনি পক্ষপাতী ছিলেন, এতে কোন প্রকার ঢাকঢাক গুড়গুড় ছিল না। এ ব্যাপারে দ্ব্যার্থহীন ও স্পষ্টবাদী ছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত

এক জীবনে সৈয়দ আবুল মকসুদ ঝাঁকের কৈ হয়ে দলভারী করেননি। কখনো হাঁটেননি চেনা পথে। যাননি লোক দেখানো অলিগলি কিংবা সভামঞ্চে। নিজের মতো করে জীবনপথ রচনা করেছিলেন তিনি। তা সহজ ছিল না। 'সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালবাসিলাম, সে কখনো করে না বঞ্চনা'। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাণীতে আস্থা রেখেছিলেন। সত্যের পথে ছিলেন ইহজাগতিকতার পুরো সময়। আর সত্যের পথে থাকার অর্থ হলো জীবনের পথে থাকা। যে জীবন কেবল নিজেকে নয়, অন্যকে নিয়ে-অপরের ভাবনায়ও। 

তার জীবনের অমোঘ উচ্চারণ ছিল, ''আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে/ আসে নাই কেহ অবনী 'পরে,/ সকলের তরে সকলে আমরা/ প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।'' যে পথে ছিল সকলের কল্যাণ এবং দেশ ও দশের ভাল থাকার দিশা। প্রশ্ন হলো, সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে সেই পথ কি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ? এই প্রশ্নের উত্তর তালাশের আগে একটু বিস্তৃত পরিসরে দেখে নেয়ার দরকার উনার পথটা কী-স্বরূপইবা কেমন?

সৈয়দ আবুল মকসুদের পথ চেনা সহজ হবে, উনার পক্ষপাতটা বোঝার মধ্যে দিয়ে। হ্যাঁ উনি পক্ষপাতী ছিলেন, এতে কোন প্রকার ঢাকঢাক গুড়গুড় ছিল না। এ ব্যাপারে দ্ব্যার্থহীন ও স্পষ্টবাদী ছিলেন। নিজে যেটাকে সত্যজ্ঞান করেছেন তাকে আঁকড়ে ধরেছেন দু'বাহু দিয়ে, আলিঙ্গন করেছেন নিজেকে উজাড় করে। সৈয়দ আবুল মকসুদ বহুধা পরিচয়ের ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সাংবাদিকতা, লেখালেখি-গবেষণা ও অ্যাক্টিভিজম ছিল উনার ব্রত-একজীবনের সাধনাবিশেষ।

প্রথমে উনার সাংবাদিকতার প্রতি নজর দেয়া যেতে পারে। সাংবাদিকতায় একজন বুদ্ধিজীবীর যে ভূমিকা পালন করার কথা উনি তাই-ই করে গেছেন। সাংবাদিকতার মধ্যে দিয়ে তিনি রাষ্ট্রের-সমাজের- সম্প্রদায়ের-ব্যক্তির হিতসাধনের কাজটিই করেছেন। উনার সাংবাদিকতার বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো কেবল ডেস্কে বসে কলাম লিখে নিজের দায়িত্ব শেষ করেননি, প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও ঘটনার ভেতর-বাহির জানতে অকুস্থলে হাজিরও হয়েছেন। সরেজমিন দেখে-শুনে-জেনে এবং অন্যান্যদের মতামত বুঝে তার পর নিজের লেখনীকে দাঁড় করিয়েছেন।

আমরা জানি, বাংলা সংবাদপত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল অপরের কল্যাণে-পরোপকার্থকে কেন্দ্রে রেখে। ঊনিশ শতকের বাংলায় কলকাতাকেন্দ্রিক নবজাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বাংলা সংবাদপত্র। এই নবজাগরণের প্রত্যয় ছিল মূলত মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সকলের মাঝে নীতিনৈতিকতা, ন্যায্যতা ও মানবাধিকারের বোধ প্রতিষ্ঠা, জাগ্রতকরণ ও তার অব্যাহত চর্চা জারি রাখা।

সংবাদপত্র যেমন প্রতিদিনের খবর সরবরাহ করবে তেমনি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার রয়েছে আরও কিছু ভূমিকা পালন ও দায়িত্ব কর্তব্য বাস্তবায়নের দায়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে তার সামনে এ দায় পূরণ করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। সংবাদপত্রের দায়িত্ব কেবল প্রতিদিনের খবর উৎপাদন বা সরবরাহ নয়, তার চেয়েও অধিক কিছু। আবুল মনসুর আহমদ যেমন বলেছেন, 'সাংবাদিকতা নিছক সংবাদ সরবরাহ নয়, সংবাদের সুষ্ঠু ব্যাখ্যাও বটে।' সংবাদের সুষ্ঠু ব্যাখ্যায় সৈয়দ আবুল মকসুদের পক্ষপাত ছিল। যার মধ্য দিয়ে তিনি রাষ্ট্র-সমাজ-প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির মঙ্গলাকাঙ্ক্ষার কাজটি করেছেন।

সংবাদপত্রের যে সমালোচক ভূমিকা, যার মধ্য দিয়ে যে কোন নিয়ম নীতি বা কাজকে আরও বেশি ন্যায্যতা, সময়ানুগ ও টেকসই করা সম্ভব সেই কাজটির সাধু দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি রাষ্ট্র থেকে ব্যক্তির যে যে বিষয়ে কথা বলার সুযোগ রয়েছে, সংশোধনের প্রয়োজন আছে, ভিন্নতর ভাবনার ফুরসত দেখেছেন সেখানেই তিনি কথা বলেছেন, লেখনীর মধ্যে দিয়ে সেসবের বুদ্ধিবৃত্তিক ফায়সালা দেয়ার চেষ্টা জারি রেখেছেন। এতে কে সন্তুষ্ট হল আর কে অসন্তুষ্ট হল তা নিয়ে ভ্রূক্ষেপ করেননি কখনোই।

উনার মতামতধর্মী লেখার বদৌলতে কত রাস্তা সংস্কার হয়েছে, কত নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে, কত জায়গায় কালভার্ট বা ব্রিজ দেয়া হয়েছে, কত এলাকায় বিদ্যুৎ গেছে, রাষ্ট্রের কতো সিদ্ধান্ত নতুন করে নেয়া হয়েছে তার উদাহরণ অগণন। দূর-দূরান্ত থেকে ভুক্তভোগীরা প্রতিকারের আশায় উনার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন সমস্যা জানানোর ব্যাকুলতা নিয়ে। উনাদের বিশ্বাস ছিল তিনি লিখলে নিশ্চয় উনাদের সমস্যা দূর হবে, বাস্তবে হয়েছেও তাই। সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যু পরবর্তীতে সাংবাদিকতার সেই ধারা বা পথ তেমনভাবে সজীব রয়েছে একথা বলার সুযোগ কম। অথচ উনার দেখানো পথেই সাংবাদিকতার দায় পূরণের সমূহ সুযোগ যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে মানুষের জন্য বৃহত্তর কল্যাণ সাধনের অবকাশ।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি সৈয়দ আবুল মকসুদ গবেষণায়ও যুক্ত ছিলেন। শৌখিন গবেষক নন, একেবারে পেশাদার গবেষক। খায়রুন্নেসা খাতুন, গোবিন্দচন্দ্র দাস, হরিশ্চন্দ্র মিত্র, পি জে হার্টগ, নবাব সলিমুল্লাহ, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর মতো কীর্তিমান ব্যক্তিত্বরা উনার এষণায় উদ্ভাসিত হয়েছেন নতুন আলোয়।

গবেষণাকর্মে তিনি ব্যতিক্রমীতা ও স্বতান্ত্রিক মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়, মওলানা ভাসানীকে নিয়ে লেখা ছয়টি বই, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা আটটি বই, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে নিয়ে লেখা তিনটি বই, নবাব সলিমুল্লাহকে নিয়ে লেখা ‍দুটি বই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে লেখা দুটি বই; যা বাঙালি মুসলমান ও বাঙালি জাতির ইতিহাসের গর্ব ও গৌরবের জায়গায় যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। স্বাধীন বাংলাদেশে এসব গবেষণা আমাদের আত্ম-আবিষ্কার ও সত্তার অন্বেষায় সলতে পাকানোর কাজটা করেছেন বহুমাত্রিকতায়।

এসব গবেষণায় তিনি এমন সব বিষয় নির্বাচন করেছেন, যার মধ্যে দিয়ে উচ্চকিত হয়েছে দেশপ্রেম, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বাঙালি মুসলমান ও বাংলাদেশের নবজাগরণ। তিনি বাঙালি মুসলমান ও বাংলাদেশের নবজাগরণের শেকড় খোঁজায় ব্রতী ছিলেন। এ কারণে সৈয়দ ওয়ালীল্লাহর জীবন ও সাহিত্য নিয়ে করেছেন ওজস্বী এক গবেষণা। ওয়ালীউল্লাহর সর্বাধিক পঠিত উপন্যাস 'লালসালু', যার ইংরেজি নাম 'ট্রি উইদাউট রুটস'। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ ছিল এমন এক বৃক্ষ যার কোন শেকড় নেই। যেমনটা বলেছেন ভি এস নাইপল, 'বাঙালি ‍মুসলমান এমন এক জাতি যারা বাস করে যেখানে বা যে দেশে সেখানকার নিয়ম তারা মেনে চলেন না, তাদের সকাল থেকে সন্ধ্যা, দিন রাত্রির পুরোটাই চলে অন্য দেশের নিয়মে'। 

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ 'লালসালু'সহ সকল লেখাতে এসকল প্রসঙ্গের একটা সাহিত্যিক রূপ তুলে ধরেছেন। মার্কসবাদী দর্শনের প্রতি পক্ষপাত ও অস্তিত্ববাদী দর্শনের ওপর প্রতীতির আলোকে বুঝতে চেয়েছেন এই দেশকে-জাতিকে-এ মাটির মানুষদের। সৈয়দ আবুল মকসুদের আকাঙ্ক্ষাও এসবের সঙ্গে সমান্তরাল ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে তিনি গবেষণার ভেতর দিয়ে এসবের আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা জারি রেখেছিলেন। উনার মাওলানা ভাসানীকে নিয়ে গবেষণা, সলিমুল্লাহকে নিয়ে গবেষণা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গবেষণা এসব প্রচেষ্টার অংশ বিশেষ। তিনি কেমন মানুষ ছিলেন, মানসকাঠামোয় কী ধারণ করতেন, জীবনের যে বৃহত্তর সাধনা সেখান কী আকাঙ্ক্ষা লালন করতেন তার একটা ছাপ রয়েছে উদ্দিষ্ট গবেষণাসমূহে। এসবের মধ্যে দিয়ে তিনি বাঙালি জাতির জন্য-বাঙালি মুসলমানের জন্য, বাংলাদেশের জন্য, বিদ্বৎসমাজের জন্য একটা পথরেখা নির্মাণ করার সাধনা করে গেছেন। যা কেবল নন্দনযোগ্য নয়, অনুসরণেরও দাবি রাখে।

সৈয়দ আবুল মকসুদ সাংবাদিকতা-গবেষণার পাশাপাশি অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবেও সক্রিয় ছিলেন। এক্ষেত্রেও উনার সৃজনশীল সত্তা ও মননশীল মানসের যুগপৎ প্রকাশ লক্ষণীয়। অ্যাক্টিভিজমের মধ্য দিয়ে কীভাবে-কখন-কতটুকু কথা বলতে হয়, তার চমৎকার একটা মডেল জারি রেখে গেছেন তিনি। এসব করার মধ্যে দিয়ে তিনি নিজেকে হাইলাইট  করেননি, ঘটনাকে হাইলাইট করেছেন। নিজেকে সামনে এগিয়ে নেননি পরিস্থিতিকে সম্মুখে এগিয়ে দিয়েছেন। অ্যাক্টিভিজমে সংযম ও পরিমিতিবোধের ব্যবহার কতোটা নান্দনিক ও প্রশংসা-জাগানিয়া হতে পারে তার প্রশংসা জাগানিয়া নমুনা মেলে উনার কাজসমূহে। 

আমরা দেখেছি, জীবদ্দশায় উনি মাঝে মাঝে এমন কিছু প্রোগ্রামে হাজির হতেন, যা কখনো কখনো প্রশ্নের জন্ম দিতো সকলের মাঝে। বিশেষ করে মন্ত্রীদের সঙ্গে উনার উপস্থিতি, উনাদের অনুষ্ঠানাদিতে শরিক হওয়ার প্রসঙ্গ। এ ব্যাপারে উনার অভিমত হল, তিনি হাজির থাকলে সাধারণ মানুষের কিছুটা হলেও উপকার হয়। কাজসমূহ তুলনামূলক বিচারে ভাল হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের পক্ষে কাজের নামে-প্রকল্পের নামে-উদ্যোগের নামে, ভিত্তিপ্রস্তরের ফিতা কেটে কেবলই আইওয়াশ দেয়া সম্ভব হয় না, নিদেনপক্ষে কাজটা করতে হয়। কথাটা সত্য। সৈয়দ আবুল মকসুদ মনে করতেন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসবে অংশগ্রহণ ছিল তার অ্যাক্টিভিজমের অংশবিশেষ। এমনকি টিভি টকশোতেও উপস্থিত হতেন এই তাড়নায়। গান্ধীবাদী জীবনধারণ, চর্চা ও অনুশীলনের মধ্যেও অ্যাক্টিভিস্ট সত্তাকে উচ্চকিত করে গেছেন, ওই লক্ষ্যকে প্রযত্নে রেখে।

সাংবাদিকতা-গবেষণা ও অ্যাক্টিভিজমে সৈয়দ আবুল মকসুদ  শীর্ষস্থানীয় ও দেশবরেণ্য ছিলেন। উপঢৌকনের প্রাবল্যের এই সময়ে, বিকিকিনির বেসাতি করা এই যুগে তিনি ছিলেন উজানে  চলা এক ব্যক্তিত্ব। যিনি নিজেই সৃষ্টি করেছিলেন ভিন্নতর এক পথ। যে পথের পথিককে সাধনা দিয়ে-সত্যবাদিতা দিয়ে, নির্লোভ-নিরাপোষকামীতায় প্রমাণ করতে হয়, মানুষের কল্যাণে-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে, দেশ ও জাতির বিকাশ ও নির্মাণের আকাঙ্ক্ষায় তিনি উৎসর্গীকৃত এক প্রাণ। সৈয়দ আবুল মকসুদ যেমনটা করেছেন, ইহজাগতিকতার অ থেকে চন্দ্রবিন্দু অবধি।

সত্য কেবল মুখে আওড়ালে বা দাবি করলেই যেমন সত্য হয়ে ওঠে না। তাকে সত্যের মতো দেখাতে হয়। সত্যকেও প্রমাণ করতে হয় তার সত্যতা খাঁটি না খাদ মেশানো। সৈয়দ আবুল মকসুদ সেই সব বিরলপ্রজ সত্যবাদীদের একজন, যিনি কাজে প্রমাণ করে গেছেন তিনি খাদহীন-খাঁটি একজন সত্যবাদী, নির্লোভ ও নিরাপোষকামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। রাষ্ট্রের উচ্চ পদ ও পদবীধারীদের সঙ্গে চলেও কিভাবে এই সত্তা জারি রাখতে হয় তার অনুপম এক দৃষ্টান্ত তিনি। রাষ্ট্রের কাছে থেকে নেননি কোন পুরস্কার, পদক, পদবি। রাষ্ট্রের আনুকূল্যে নেননি কোন প্লট-ফ্ল্যাট বা বিদেশভ্রমণের ‍সুযোগ ও ‍সুবিধা।

কারণ যে কোন নৈতিক মানুষের কাছে এসব উপঢৌকন-প্রকারান্তরে বিকিকিনিরই অংশবিশেষ, যার আড়ালে রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠানের  মোদ্দা অভিপ্রায় হল ব্যক্তিকে খরিদ করা কিংবা প্রভাবিত করার সুক্ষ্ণ বাসনা।  বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন তাও সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের শাসনামলে। সৈয়দ আবুল মকসুদের পথ জাগতিক ও পার্থিব প্রাপ্তির পথ নয়। কারণ প্রাপ্তি নয় প্রদানই ছিল উনাদের সাধনা। সাংবাদিকতা-লেখালেখি-গবেষণা ও অ্যাক্টিভিজমের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল অপরের কল্যাণ, যার মধ্যে দিয়ে সকল শুভ ইচ্ছার বিকাশ ও বাস্তবায়নে পালন করেছেন একজন সংশপ্তকের ভূমিকা।

প্রশ্ন হল, সৈয়দ আবুল মকসুদের দেখানো পথ কি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ? সময় ও বাংলাদেশের বাস্তবতা এবং বিশ্ব পরিস্থিতি আমাদেরকে কোন সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে? তার সাধনার সাধু ও নৈর্ব্যক্তিক দিক হলো এর গভীরে নিহিত আছে বৈরী সময়ের মুক্তির বারতা। সুতরাং আমরা কী করব কোন পথে যাব তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরকে-নতুন প্রজন্মকে। আমরাই কি জিইয়ে রাখব সৈয়দ আবুল মকসুদের পথ, নাকি তাকে লুপ্ত হওয়ার সুযোগ করে দেব, প্রশ্নের ফায়সালা হওয়া কি জরুরি নয়?

Comments

The Daily Star  | English

'All our hopes, dreams now shattered'

Says Afroza Akter, wife of worker killed in Basabo construction site

1h ago