গর্ভকালীন ত্বকের সমস্যায় কী করবেন
গর্ভাবস্থায় শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন হয়ে থাকে। এই পরিবর্তন ত্বকেও দেখা যায়। সাধারণত হরমোনজনিত প্রভাব ও গর্ভের শিশুর আকার বেড়ে যাওয়ার কারণেই এসব পরিবর্তন হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় ত্বকে কী পরিবর্তন হয়
- গর্ভের শিশু আকারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পেটের ত্বকে টান পড়তে থাকে। ফলে ত্বকে ফাটা দাগ দেখা দেয়।
- গর্ভকালে হরমোনজনিত কারণে ত্বকের তৈলাক্ততা বেড়ে যায়। মুখের ত্বকের তৈলাক্ততা বাড়ার কারণে ব্রণ দেখা দেয়।
- হরমোনজনিত কারণে মুখে মেছতা দেখা দিতে পারে। গলা, ঘাড় ও ত্বকের বিভিন্ন ভাঁজে গাঢ় দাগ দেখা দিতে পারে।
- যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের অ্যালার্জিজনিত অ্যাকজিমা বেড়ে যেতে পারে।
- চুলকানির ফলে ত্বক লালচে হয়ে ফুলে যেতে পারে। তবে গর্ভকালীন জন্ডিসের কারণে চুলকানি হলেও ত্বকের কোনো পরিবর্তন হয় না।
কী করবেন
- সাধারণত প্রসব পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যেই গর্ভকালীন ত্বকের সমস্যাগুলো নিজে থেকেই দূর হয়ে যায়। তবে গর্ভবস্থায় ত্বকের যত্নে কিছু বিষয় মেনে চললে সমস্যার তীব্রতা যেমন কম হয়, তেমনি কম সময়ে সেগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
- ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে নিয়মিত ক্লিনজার বা স্ক্র্যাবার দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।
- ত্বকের মসৃণতা ঠিক রাখতে ইমোলেন্ট বা ময়েশ্চারাইজার ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা উচিত।
- পেটের ফাটা দাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি, ভার্জিন নারকেল বা অলিভ ওয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। ঘরের বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ক্রিম/লোশন ব্যবহার করতে হবে।
- গর্ভবস্থায় শরীরে পানীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য পর্যাপ্ত পানি ও পানীয় পান করতে হবে।
উল্লেখ্য, গর্ভকালীন ত্বকের এই সমস্যাগুলো কোনো রোগ নয়। প্রসবের পর এগুলো এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। তবে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ত্বকে লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেশি হলে কিংবা প্রসবের ৬ মাস পরেও ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না এলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. এম আর করিম রেজা
ত্বক ও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ
Comments