কোন সময় ও কতক্ষণ হাঁটা উচিত, ভরা নাকি খালি পেটে হাঁটবেন
হাঁটা যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তা সবাই জানি। কিন্তু কখন ও কীভাবে হাঁটা উচিত, ভরা পেট বা খালি পেটের সঙ্গে হাঁটার কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা জানেন না অনেকেই।
এসব প্রশ্নের উত্তর জেনে নিন এএমজেড হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডের পুষ্টি, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক ডিজিজ কনসালটেন্ট ডা. মো. জয়নুল আবেদীন দীপুর কাছ থেকে।
হাঁটার উপকারিতা
ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত। আর হাঁটা হলো সবচেয়ে মুক্ত ও সহজ ব্যায়াম। সক্রিয় জীবনাচারের অন্যতম উপায় হতে পারে নিয়মিত হাঁটা। সুস্থ থাকার ক্ষেত্রে হাঁটার উপকারিতা অপরিসীম। যেমন-
১. দ্রুত হাঁটার মাধ্যমে ক্যালরি বার্ন করা যায়।
২. নিয়মিত হাঁটা আমাদের হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
৩. রক্তে গ্লুকোজ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪. শরীরের কিছু কিছু জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে হাঁটার অভ্যাস।
৫. শারীরিক শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৬. রক্তে ডোপামিন ও সেরোটোনিন হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে মানসিক শক্তি ও কাজের প্রতি উৎসাহ বাড়ায়।
৭. কর্মশক্তি বাড়ানোর জন্য হাঁটা হলো অন্যতম ব্যায়াম।
কোন সময় ও কতক্ষণ হাঁটা উচিত
দিনের যেকোনো সময় হাঁটা যায়। তবে সকাল বেলা হাঁটার জন্য ভালো সময়। কর্মব্যস্ত জীবনে প্রত্যেকের যার যার সময় সুযোগ বের করে হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। সাধারণত সুস্থ থাকার জন্য প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। সেই হিসেবে প্রতি দিন ২৫ থেকে ৩০ মিনিটে দ্রুতগতিতে হাঁটা উচিত বলে জানান ডা. জয়নুল আবেদীন।
কীভাবে হাঁটা উচিত
হাঁটার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন সামনে ঝুঁকে না হাঁটা হয়। শরীরের সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি সামনের দিকে সোজাভাবে যাবে। অর্থাৎ শরীরের বুক ও ঘাড় সোজা রেখে সামনের দিকে হাঁটতে হবে। হাঁটার স্পিড হবে ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার/ঘণ্টা হিসেবে। যদি কারো হৃদযন্ত্রের সমস্যা থাকে তাহলে প্রথমে কম গতিতে হাঁটতে হবে, তারপর ধীরে ধীরে গতি ও সময় বাড়বে সক্ষমতা অনুযায়ী।
হাঁটার সঙ্গে ভরা পেট ও খালি পেটের কোনো সম্পর্ক আছে কি
ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, সাধারণত একদম ভরা পেটে না হাঁটাই ভালো। খাওয়ার কিছুক্ষণ পর হাঁটা যেতে পারে। কিন্তু শরীরের ওজন কমানোর জন্য হলে খালি পেটে হাঁটা উচিত। তবে কেউ যদি ইনসুলিন নেন তাহলে একদম খালি পেটে হাঁটা উচিত নয়। ডায়াবেটিস মেপে তারপর হাঁটবেন, যেন হাইপো-গ্লাইসমিয়া না হয়।
হাঁটার সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখা উচিত
হাঁটার সময় খেয়াল রাখতে হবে আবহাওয়া অনুযায়ী যথাযথ ও আরামদায়ক কাপড় পরার বিষয়টি। বাসায় ট্র্যাডমিল বা বাইরে পার্কে হাঁটা যেতে পারে। ব্যায়ামের উদ্দেশ্যে হাঁটার জন্য রানিং সু ব্যবহার করা উচিত। এতে হাঁটুর ওপর চাপ কম পড়ে এবং অনেকক্ষণ হাঁটা যায়।
কাদের জন্য হাঁটাহাঁটি ঝুঁকিপূর্ণ
অনেক বেশি বয়সের মানুষ একা একা হাঁটা উচিত নয়। তাছাড়া যারা ইনসুলিন নেন তারা হাঁটার আগে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নিবেন। হার্টের রোগীরাও তাদের হাঁটার গতি ও সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করবেন।
Comments