সন্তানের আবদার সামলাবেন যেভাবে
সন্তান আবদার করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সবার সামনে বকাবকি, শাসন বা রাগ দেখানো ঠিক নয়। কীভাবে সন্তানের আবদার সামলাবেন তা নিয়ে কিছু পরামর্শ জেনে নিন।
খুব ছোট থেকে সন্তানের মধ্যে একটি ডিসিপ্লিন গড়ে তুলুন। নিজেরাও সেগুলো মেনে চলুন, যেন সন্তানের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠতে পারেন। সন্তান যখন পড়ে তখন নিজেরাও টিভি চালু না করে বা মোবাইলে ব্যস্ত সময় পার না করে বই পড়ুন বা অন্য কাজ করুন। তাহলে দেখবেন শিশুরা পড়ার সময় টিভি বা মোবাইল দেখার বায়না করছে না।
পরিবারের সদস্য ও বাইরের মানুষের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হবে তা নিজের ব্যবহারের মাধ্যমে সন্তানকে শেখান। খেলার মতো করে আনন্দের মাধ্যমে এসব বিষয় তাকে বোঝাতে হবে। তাহলে শপিংমল, রেস্তোরাঁ বা অন্য কোথাও কীভাবে বলতে হবে বা কেনাকাটা করতে হবে তা সন্তান আপনাকে দেখে শিখতে পারবে।
সাধারণত তারা নির্দিষ্ট কিছুর জন্য বায়না করে। যেমন- চকলেট, আইসক্রিম, খেলনা। কিন্তু, সন্তান যদি বাড়ির বাইরে গিয়ে এসবের জন্য বায়না করে তাহলে রেগে যাবেন না। আপনি রেগে গেলে সন্তান জেদি হয়ে উঠবে। আপনি বরং কয়েক মিনিট চুপ করে ওকে কথা বলতে দিন। তারপর নিজের কথা বুঝিয়ে বলুন। কিন্তু, চোখ রাঙিয়ে বলবেন না, হাসতে হাসতে বলুন। তাহলে সে বিষয়টি বুঝতে পারবে।
যেসব জায়গায় গেলে বায়না করে- যেমন খেলনার দোকান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর; সেখানে যাতায়াত কমিয়ে দিন। খুব প্রয়োজন থাকলে একা যান, সন্তানকে সঙ্গে নিবেন না। আর যদি যাওয়ার জন্য খুব জিদ করে তাহলে কিছু শর্ত দিয়ে দিন। ওকে জানিয়ে দিন কেবল শর্ত মানলেই যেতে পারবে।
বায়না বা দুষ্টুমি করলে বাড়িতে বা বাড়ির বাইরে অন্যের সামনে কখনোই সন্তানকে বকবেন না। কিংবা কোনো অপমানজনক মন্তব্য করবেন না। ঠান্ডা মাথায় ভাবুন এবং নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকুন। সন্তানের বায়নায় নিজের দুর্বলতাকে গুরুত্ব দেবেন না বা প্রকাশ করবেন না। এমনকি নিজের সাধ্যের বাইরে কিছু কিনে দেবেন না।
অনেক সময় শরীর খারাপ থাকলে সেটার প্রকাশ পায় বায়নাতে। তাই সন্তানের কথাগুলো উড়িয়ে দেবেন না। সময় নিয়ে তার কথাগুলো শুনুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন সে কী চাইছে বা তার সমস্যা কোথায়। সম্ভব হলে সন্তানের সঙ্গে আলাদাভাবে একান্তে কথা বলুন। তাহলে সে মন খুলে তার কথাগুলো বলতে পারবে।
সন্তান অনেক সময় এমন কিছুর জন্য বায়না ধরে যা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিনে দেওয়া সম্ভব হয় না। যেমন- আপনি জানেন আইসক্রিম খেলে ঠান্ডা লেগে যাবে। তাই আইসক্রিম কিনে দিতে পারছেন না। তখন ওর পছন্দ মতো বিকল্প কোনো খাবার কিনে দিতে পারেন। তবে অবশ্যই তাকে বুঝিয়ে বলবেন, কেন তাকে আইসক্রিমের বদলে অন্য কিছু দিচ্ছেন।
Comments