নতুন বছরে ক্যারিয়ারে উন্নতির ৫ উপায়

চাকরির বাজারে আজকাল টিকে থাকাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন বছরে প্রতিযোগিতা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। এজন্য নিজেকে আরও বেশি দক্ষ করার লড়াইয়ে নামতে হবে এখন থেকেই। 
নতুন বছরে ক্যারিয়ারে উন্নতির ৫ উপায়
ছবি: সংগৃহীত

চাকরির বাজারে আজকাল টিকে থাকাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন বছরে প্রতিযোগিতা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। এজন্য নিজেকে আরও বেশি দক্ষ করার লড়াইয়ে নামতে হবে এখন থেকেই। 

জেনে নিন নতুন বছরে ক্যারিয়ারে উন্নতির ৫টি উপায়-

'পাওয়ার ট্রাইফেক্টা': স্বচ্ছতা, ধারাবাহিকতা, শৃঙ্খলা নীতি অনুসরণ

স্বচ্ছতা, ধারাবাহিকতা এবং শৃঙ্খলা- এই ৩টি বিষয় যোগাযোগ উন্নতি, চিন্তার ওপর নেতৃত্বদানের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং শক্তিশালী করে তোলে। 

আপনি কী চাচ্ছেন, আপনার মূল্য কতটা, কোন বৈশিষ্ট্য আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করে, আপনি কীভাবে অন্যদের সাহায্য করতে পারবেন এবং কীভাবে অন্যরা আপনার কাজে আসবে ইত্যাদি স্বচ্ছতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। স্বচ্ছতা যেমন কোনো বিষয়ে জানতে সাহায্য করে, তেমনি পছন্দ-অপছন্দের সীমারেখা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা তুলে ধরে। শুধু তাই নয়, স্বচ্ছতা ব্যক্তির লক্ষ্য অর্জনের পথকে সুগম করে এবং বিভ্রান্তিকর বিষয় থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।

ধারাবাহিকতা অনুভূতি ও দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যোগাযোগ স্থাপন করাকে সহজ করে তোলে। এর মাধ্যমে অন্যরা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি জানতে পারবে, আপনি উপলব্ধি না করলেও আপনার সম্পর্কে বার্তা পৌঁছে যাবে অন্যের কাছে।

শৃঙ্খলা না থাকা ব্যক্তির মূল্য হ্রাস করে। অন্যরা আপনার সম্পর্কে কী ভাববে তা চিন্তা করার চেয়ে আপনি কোন বিষয় ভালো পারেন সে বিষয়ে নজর দিন এবং বাকি সবকিছু ভুলে যান। তারপর আগ্রহের বিষয়গুলোর মধ্যে সেরা কোনোটিতে নিজেকে দক্ষ করে তুলুন এবং অন্যদের সে বিষয়ে সাহায্য করার মতো যোগ্যতা অর্জন করুন, যাতে অন্যরা আপনার নাম বললেই আপনাকে চিনতে পারে।

দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন

আপনার দৃষ্টিভঙ্গি হলো ক্যামেরার একটি লেন্স, যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে দেখতে পারেন এবং আপনার ক্যারিয়ার ও বিশ্বকে দেখার ক্ষমতা রাখেন। ভেবে দেখুন তো, আপনি যদি নিজেকে 'আমি এটির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি' বলার পরিবর্তে 'আমি এটির মধ্য দিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি' এবং 'করতে হবে' পরিবর্তে 'করতে পারি' বলার অভ্যাস করেন কেমন হবে?

'কোনো কিছুর মধ্য দিয়ে যাওয়া' নেতিবাচকতা এবং অনাগ্রহ প্রকাশ করে, আর 'কোনো কিছুর মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়া' বিষয়টি ইতিবাচক। আবার 'করতে হবে' বলতে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা বোঝায় আর 'করতে পারি' মানে যোগ্যতা বোঝায়। কাজেই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।   

অতীতের ভয়কে জয় 

ভয় বেশ শক্তিশালী আবেগ, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন কাজ থেকে আমাদের বিরত রাখে। কিন্তু গুটিয়ে থাকলে জীবনের অনেক কিছু অপূর্ণ থেকে যায়।

কর্মজীবনের উদ্বেগ, সন্দেহ এবং ভয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করাই হলো একমাত্র সমাধান। টাকায় যেমন টাকা আনে, তেমনি একটি কাজ আরও অনেক কাজের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। আপনি যখন সচেতন হয়ে কোনো পদক্ষেপকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করবেন, সেই পদক্ষেপ আপনাকে আরও সামনে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেবে।

মনে রাখবেন, জীবনের ছোট ছোট পরিবর্তন পুরনো পদ্ধতি এবং রুটিন ভেঙেনতুন জীবনের দিশা দেখায়। তাই ভয়ের জন্য নিজেকে থামিয়ে না রেখে, লড়াই করে ভয়কে জয় করতে হবে।

সহানুভূতি অনুশীলন

আরও বেশি সহানুভূতিশীল হতে হবে। অন্যদের কাজ আদায়ের মাধ্যম না ভেবে প্রথমে মানুষ হিসেবে দেখার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।

এ ছাড়া বক্তার চেয়ে ভালো শ্রোতা হওয়ার অভ্যাস করতে হবে। গভীর সংযোগের বিকাশ ঘটিয়ে চিন্তাশীল এবং অনুসন্ধানমূলক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে, যাতে আপনার অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আপনি যদি সহনুভূতিশীল হতে পারেন তাহলে কর্মী, গ্রাহক এবং অংশীদারদের আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। 

আরও বেশি আত্মসচেতনতা 

আত্মসচেতন ব্যক্তি নিজের শক্তি, দুর্বলতা, চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, প্রেরণা এবং আবেগ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানেন। আত্মসচেতন ব্যক্তি নিজের চাহিদা, দক্ষতা সম্পর্কে সবসময় সৎ থাকেন।

এর মাধ্যমে কোন বিষয় আপনাকে অন্যদের থেকে স্বকীয়তা দান করে এবং কোন অনন্য প্রতিভা ব্যবহার করে নির্দিষ্ট পরিবেশে প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন তা জানা যায়। এ ছাড়া নিজের দুর্বলতার দিক জানা এবং সেগুলো দূরীকরণে কাজ করার উদ্যম পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র: ফোর্বস, মাই গ্রেট লার্নিং

Comments