কাঁঠালের বিচি খেতে ভুলবেন না যে কারণে

কাঁঠালের বিচির উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ফল কাঁঠাল একটি মৌসুমি ফল। কাঁঠালের রসালো অংশের পাশাপাশি এর ভেতরের বিচিও ব্যাপক জনপ্রিয়। কাঁঠালের বিচি ভেজে, সেদ্ধ করে বা রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকেই আছেন কাঁঠাল বা কাঁঠালের বিচি খেতে পছন্দ করেন না। তবে কাঁঠাল বিচ খাওয়া শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এটি খেলে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।

চলুন জেনে নেই কাঁঠালের বিচির উপকারিতা। এ বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন সিলেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের ডায়াবেটিস এডুকেটর ও পুষ্টিবিদ স্বর্ণালী দাশ বিজয়া।

স্বর্ণালী দাশ বিজয়া বলেন, কাঁঠাল কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইটোক্যামিকেলে সমৃদ্ধ ফল। তেমনি এটির বিচিও কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, সালফার, জিংক, কপার ইত্যাদির ভালো উৎস।

কাঁঠালের বিচির পুষ্টি উপাদান থেকে যেসব পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়-

কার্বোহাইড্রেট

কাঁঠালের বিচিতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ফাইবার থাকে। এ ধরনের ফাইবার বাওয়েল মুভমেন্ট বা অন্ত্রের কার্যকলাপ সঠিকভাবে পরিচালনা করে। অদ্রবণীয় ফাইবারগুলোকে প্রিবায়োটিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় অর্থাৎ এ ফাইবার অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াদের খাদ্য হিসেবে কাজ করে।

এ ফাইবারগুলো ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ এবং হেমোরয়েডের লক্ষণ থেকে মুক্তি দিতে পারে। এমন খাবার বেশি করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে উপশম পাওয়া যায়। এ ছাড়া কাঁঠালের বিচিতে থাকা রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ মাত্রাতিরিক্ত ক্ষুধা নিবারণ করে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়, হজমক্রিয়া ও ইনসুলিন সেনসিটিভির উন্নতি ঘটায়।

প্রোটিন

কাঁঠালের বিচিতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন রয়েছে, যা পেশি গঠনে সহায়তা করে। অপুষ্টির সমস্যা সমাধানে এটি বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে কোলেস্টেরল নেই বললেই চলে।

ফ্যাট

কাঁঠালের বিচি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমায় আর ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়। এইচডিএল হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। পাশাপাশি এটি উচ্চ রক্তচাপজনিত ঝুঁকি কমায়।

ভিটামিন ও মিনারেল

কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে প্রচুর থায়ামিন ও রিবোফ্লাভিন। উভয়ই ভিটামিন বি এর অন্তর্গত। এরা শরীরে শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি নার্ভস সিস্টেম, হৃদ্‌যন্ত্র, মস্তিষ্ক, অন্ত্র, মাংসপেশি ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।

এ ছাড়া এতে ম্যাগনেশিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করার মাধ্যমে হাড় মজবুত করে এটি।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রভাব

কাঁঠালের বিচিতে যেই সালফার থাকে সেটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণসম্পন্ন। ডায়রিয়া, গ্যাসের সমস্যা ও অন্যান্য খাদ্যজনিত পেটের অসুখ দূর করতে সাহায্য করে এটি।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান

কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, স্যাপোনিনস, ফেনোলিকস। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের ইনফ্ল্যামেশনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।

অন্যান্য

চীন ও ভারতে কাঁঠালের বীজ অ্যালকোহলের বিষক্রিয়া দূরীকরণের অ্যান্টিটোড প্রস্তুতে ব্যবহৃত হয়। কাঁঠালের বিচিতে জ্যাকালিন নামের যেই গুরুত্বপূর্ণ ল্যাকটিন আছে, তা এইচআইভি আক্রান্তদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটির ক্যানসার প্রতিরোধক ক্ষমতাও রয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

5h ago