হামাসের পেতে রাখা বোমায় ৩ ইসরায়েলি সেনা নিহত

রাস্তার পাশে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে তিন ইসরায়েলি সেনা নিহত ও আরও দুইজন আহত হয়েছেন। গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকায় সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।
আজ মঙ্গলবার সকালে সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
নিহতরা হলেন কমব্যাট মেডিক স্টাফ সার্জেন্ট লিওর স্টেইনবার্গ (২০), কমব্যাট মেডিক স্টাফ সার্জেন্ট ওফেক বারহানা (২০) ও স্কোয়াড কমান্ডার স্টাফ সার্জেন্ট ওমর ভ্যান গেলডার (২২)।
হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। ওই হামলা শুরুর পর এটিই একদিনে আইডিএফ'র সবচেয়ে বড় সামরিক ক্ষতির ঘটনা।
জাবালিয়ায় নিহত সেনারা আইডিএফ'র নবম আরমার্ড ব্যাটালিয়নের একটি প্লাটুনের অংশ হয়ে বিশেষ অভিযানে অংশ নিচ্ছিলেন।
আইডিএফ'র প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে—ওই পাঁচ সেনা হামভি জিপে করে সেনাবাহিনীর ফায়ার ইঞ্জিনকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল গাজায় ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানের (এপিসি) আগুন নেভানো। ওই এপিসিতে কারিগরি ত্রুটির কারণে আগুন লেগেছিল।
জাবালিয়া থেকে বের হয়ে আসার পথে গাড়িবহরে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে তিন সেনা নিহত ও দুইজন আহত হন।
দুই আহত সেনা এখনো পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত নন।

পরবর্তীতে একই রাস্তার দুইপাশে আরও ২০টি বোমা চিহ্নিত করে আইডিএফ। বোমাগুলোও বিস্ফোরণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি কেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আহত সেনাদের বের করে আনতে জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় উদ্ধারকারী দলকে। সেনারা বুঝতে পেরেছিলেন, তাদের আশেপাশে অসংখ্য বোমা পেতে রাখা আছে। পরে ওই অঞ্চল থেকে বের হয়ে আসার জন্য বেশ কয়েক দফা গুলি চালায় সেনা সদস্যরা।
আইডিএফ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। কীভাবে হামাসের সদস্যরা সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত সড়ক চিহ্নিত করে বোমা পেতে রাখল—তা জানার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।
এক বিবৃতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫০ জন। সেদিনই গাজায় নির্বিচারে প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
দুই দফায় প্রায় আড়াই মাস যুদ্ধ বন্ধ থাকলেও ৬০০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা গণহত্যামূলক হামলায় ৫৪ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের হামলা শুরুর পর ৮৬১ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ সেনা।
Comments