১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে আবারও যুদ্ধ শুরু: নেতানিয়াহু

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার মধ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস তাদের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

আজ এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের বৈঠক শেষে ইসরায়েলের পরবর্তী উদ্যোগ সম্পর্কে জানান নেতানিয়াহু। হামাস জিম্মি মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ 'অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত' করার পর বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

যুদ্ধ শুরুর উদ্যোগ ক্যাবিনেটে পাস

নেতানিয়াহু বলেন, 'যদি হামাস আমাদের জিম্মিদের শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে মুক্তি না দেয়, তাহলে যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটবে এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী) আবারও তীব্র হামলা চলবে। হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় না আসা পর্যন্ত এই হামলা অব্যাহত থাকবে।'

তিনি আরও জানান, তার এই সিদ্ধান্ত ক্যাবিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। 

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও হামাসকে সময় বেধে দিয়ে বলেছিলেন, একজন-দুইজন নয়, শনিবার বাকি সব জিম্মিকেই মুক্তি দিতে হবে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জেরুজালেম পোস্টকে নিশ্চিত করেন, চুক্তি ও দুই পক্ষের বোঝাপড়া অনুযায়ী শনিবার তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস—এটুকুই ইসরায়েলের প্রত্যাশা। হামাস এতে সম্মতি দিলেই যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে।

তেল আবিবে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাতে এক ইসরায়েলি ট্রাম্পের বেশ ধারণ করেন। তার হাতে নেন নেতানিয়াহুর পুতুল। ছবি: এএফপি
তেল আবিবে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাতে এক ইসরায়েলি ট্রাম্পের বেশ ধারণ করেন। তার হাতে নেন নেতানিয়াহুর পুতুল। ছবি: এএফপি

একই ভাবে, ধাপে ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে বাকি জিম্মিরাও মুক্তি পাবেন। যুদ্ধবিরতির এই পর্যায়ে মোট ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ জন মুক্তি পেয়েছেন।

তবে পরবর্তীতে এই অবস্থান থেকে সরে আসে নেতানিয়াহুর প্রশাসন। মঙ্গলবার দিনের শেষ ভাগে অপর এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভা মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তারাও চাইছেন শনিবার প্রথম দফার বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। 

নেতানিয়াহু বলেন, 'আমি নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের সঙ্গে চার ঘণ্টা আলোচনা করেছি। আমরা সবাই গত শনিবার মুক্তি পাওয়া তিন জিম্মির করুন অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছি।'

'আমরা সবাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার দাবিকে স্বাগত জানিয়েছি। একইসঙ্গে, গাজার ভবিষ্যত নিয়ে প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্পের) বৈপ্লবিক চিন্তাধারাকেও আমরা স্বাগত জানাই', যোগ করেন তিনি। 

যুদ্ধের জন্য আইডিএফ প্রস্তুত

নেতানিয়াহু বলেন, 'জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমি গতকাল রাতে আইডিএফকে গাজা উপত্যকার ভেতরে ও চারপাশে সেনা সদস্যদের মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।' 

নেতানিয়াহুর মন্তব্যের অল্প সময় পর সামরিক বাহিনী জানায়, দক্ষিণ কমান্ডে রিজার্ভসেনা সহ বাড়তি যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হচ্ছে।

প্রায় দেড় বছর ধরে এক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আরেক যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে চলেছেন ইসরায়েলি সেনারা। ফাইল ছবি: রয়টার্স
প্রায় দেড় বছর ধরে এক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আরেক যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে চলেছেন ইসরায়েলি সেনারা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

অপর এক সূত্র জানান, বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আগে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না।

সোমবার এই বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ ফেব্রুয়ারি জিম্মিদের মুক্তি দেবে না। কারণ হিসেবে জানায়, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। 

সোমবারের এই ঘোষণার পর থেকেই আইডিএফ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ কমান্ডের সব সেনাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Former CEC ATM Shamsul Huda passes away at 83

As CEC, Huda oversaw the ninth parliamentary elections in 2008

36m ago