পেজেশকিয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দিলেন খামেনি

৫ জুলাইর ভোটে এক কোটি ৬০ লাখেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন পেজেশকিয়ান (৬৯)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী সাঈদ জলিলি। 
নতুন প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে (ডানে) আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানালেন খামেনি (বাঁয়ে)। ছবি: রয়টার্স
নতুন প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে (ডানে) আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানালেন খামেনি (বাঁয়ে)। ছবি: রয়টার্স

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাসুদ পেজেশকিয়ানকে নিয়োগ দিয়েছেন। 

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। 

এ মাসের শুরুর দিকে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনে জয় লাভ করেন সংস্কারপন্থি প্রার্থী পেজেশকিয়ান। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হলে এই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়।

খামেনির কার্যালয়ের পরিচালক ধর্মীয় নেতার বার্তা পড়ে শোনান। বার্তায় খামেনি বলেন, 'আমি বিজ্ঞ, সৎ, জনপ্রিয় ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি মি. পেজেশকিয়ানের নির্বাচনে জয়লাভের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি এবং আমি তাকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছি।'

মঙ্গলবার পার্লামেন্টে শপথ নেবেন নতুন প্রেসিডেন্ট।

সমর্থন জানানোর অনুষ্ঠানটি তেহরানে ইরানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। 

৫ জুলাইর ভোটে এক কোটি ৬০ লাখেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন পেজেশকিয়ান (৬৯)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী সাঈদ জলিলি। 

তিনি দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটের মোট ৫৪ শতাংশ পান। মোট তিন কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

রানঅফ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রথম পর্যায়ের ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৯ দশমিক ৮০ শতাংশ হয়েছিল বলে জানিয়েছে ইরানের নির্বাচন কমিশন।

জলিলি ও সাবেক মধ্যমপন্থি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। নির্বাচনের আগে পেজেশকিয়ানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন রুহানি।

ইরানে প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাসুদ পেজেশকিয়ানে প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাসুদ পেজেশকিয়ানকে নিয়োগ দেন। ছবি: রয়টার্স

দেশটির সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তি হচ্ছে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনি। তিনি ৩৫ বছর ধরে এই পদে আছেন।

খামেনির আনুষ্ঠানিক সমর্থন পাওয়ার পর পেজেশকিয়ান তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রেসিডেন্টের 'কঠিন দায়িত্ব' পালনের অঙ্গীকার করেন।

নির্বাচনের আগে একমাত্র সংস্কারপন্থি প্রার্থী পেজেশকিয়ান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করার অঙ্গীকার করেন।

ওয়াশিংটন এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ২০১৮ সালে এটি ভেস্তে যায়।

পেজেশকিয়ান ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গেও গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরির কথা বলেছেন। তবে মার্কিন বিধিনিষেধের মুখে ইরানের প্রতি ইউরোপীয় দেশগুলোর দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগও আনেন তিনি।

পেজেশকিয়ান পেশায় একজন হার্ট সার্জন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পার্লামেন্টে উত্তর-পশ্চিমের শহর তাবরিজের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছেন।

ইরানের সর্বশেষ সংস্কারপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ খাতামির সরকারে ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন পেজেশকিয়ান।

 

Comments