টিভি সাক্ষাৎকারের ভেতর দিয়ে প্রচারণার মোড় ঘুরিয়ে দিতে চান বাইডেন

মার্কিন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আশা করছেন, আজ টেলিভিশনে প্রচার হতে যাওয়া এক সাক্ষাৎকারের ভেতর দিয়ে তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণার মোড় ঘুরিয়ে দেবেন।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

এক সপ্তাহ আগে রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিএনএন আয়োজিত প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে অংশ নেন বাইডেন। ২০২৪ এর নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে সেদিনই প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হন দুই নেতা।

৯০ মিনিটের এই বিতর্কে ৮১ বছর বয়স্ক বাইডেন তাকে নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সব ধরনের উদ্বেগ-আশংকাকে সত্যে পরিণত করেন।

প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট চলাকালীন সময়ই কার্যত ঘুমিয়ে পড়ছিলেন বাইডেন। সব মিলিয়ে তার বক্তব্য ছিল খুবই ছন্নছাড়া। এই পরিস্থিতিতে ডেমোক্র্যাটদের মধ্য থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল যে, বাইডেনের নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। শুধু তাই নয়, বারবার কথার খেই হারিয়ে ফেলেছেন বাইডেন। ট্রাম্পের প্রশ্নের উত্তর দিতে যেয়ে ভিন্ন প্রসঙ্গে চলে গেছেন। অনেকেই বলছিলেন, বয়সের কারণে কথায় খেই হারিয়ে ফেলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ঘড়িতে সময় দেখছেন জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
ঘড়িতে সময় দেখছেন জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

দলের মধ্য থেকে গুঞ্জন উঠেছে, বাইডেনকে প্রমাণ করতে হবে তিনি নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পকে পরাজিত করার ও আরও চার বছর দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা রয়েছে তার।

বুধবার এক জরুরি বৈঠকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির গভর্নরদের সঙ্গে দেখা করেন বাইডেন। এই বৈঠকে গভর্নররা তার প্রতি সমর্থন জানালেও কংগ্রেসে অন্তত তিন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। একই সুরে দাবি তুলেছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকীয় পরিষদ ও রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকাররা। 

তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, 'তিনি কোথাও যাচ্ছেন না' এবং 'তিনি নির্বাচনী রেসের শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।'

কিন্তু প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের পর প্রকাশিত জনমত জরিপের ফলে দেখা গেছে, এতদিন ধরে ট্রাম্পের সঙ্গে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও দ্রুত এই ব্যবধান বড় হচ্ছে এবং ট্রাম্পের দিকেই হেলে পড়ছে পাল্লা।

আজ শুক্রবার উইসকনসিনে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় এবিসি নিউজের সঞ্চালক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার জর্জ স্টেফানোপোলোসের কাছে সাক্ষাৎকার দেবেন বাইডেন। বিশ্লেষকদের মতে, সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ দূর করার ও নতুন করে তার প্রতি প্রত্যাশা ফিরিয়ে আনতে এই সাক্ষাৎকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ।

মার্কিন রাজনীতিক ধারাভাষ্যকার জর্জ স্টেফানোপোলোস। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন রাজনীতিক ধারাভাষ্যকার জর্জ স্টেফানোপোলোস। ছবি: রয়টার্স

শুরুতে সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ সপ্তাহজুড়ে প্রচারের পরিকল্পনা থাকলেও তা পরিবর্তন করেছে এবিসি। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ছয়টা) পুরো সাক্ষাৎকারটি এবিসিতে সম্প্রচার করা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, অত্যন্ত চৌকস ও যোগ্য একজন রাজনৈতিক ভাষ্যকারের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন বাইডেন। রাজনৈতিক যোগাযোগে স্টেফানোপোলোসের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ঘাটতি নেই।  সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন তিনি।

ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বাইডেনের কথা অনেক সময় বোঝা যায়নি এবং তিনি বারবার প্রসঙ্গ বদলাচ্ছিলেন।

এই সাক্ষাৎকার তার সামনে হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার সুযোগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, তিনি যদি স্পষ্ট ভাষায় বক্তব্য রাখতে পারেন, তাহলে তাকে নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের উদ্বেগ অনেকাংশেই কমে আসবে।

সাবেক হাউস স্পিকার ও প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি মত দেন, প্রেসিডেন্টের জন্য এক বা একাধিক উচ্চ-পর্যায়ের সাক্ষাৎকার দেওয়া অত্যন্ত 'জরুরি'।

অন্যান্য সমর্থকরা দাবি করেছেন, বাইডেনকে দীর্ঘ সময়ের সংবাদ সম্মেলনে বসিয়ে তার প্রাণশক্তির পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তিনি আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ন্যাটো সম্মেলনের সময় একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন। তবে এই সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

ইতোমধ্যে ট্রাম্প বাইডেনকে আবারও বিতর্কে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, আবারও বাইডেনের সঙ্গে তিনি 'যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায়' 'খোলামেলা আলোচনায়' অংশ নিতে প্রস্তুত।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

11h ago