ঘূর্ণিঝড় হামুন: পটুয়াখালী থেকে সব রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ, প্রস্তুত ৭০৩ আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলমের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সকাল থেকে পটুয়াখালী-ঢাকাসহ সব রুটের লঞ্চসহ নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, জেলায় ৭০৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩৫টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৮ হাজার ৭৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং তারা স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং শুরু করেছেন।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. কবির হাসান জানান, জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে তারা, আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনসহ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। বাতাসের তীব্রতা ও নদ-নদীর পানির উচ্চতা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, উপকূলীয় এলাকায় বাতাসের তীব্রতা বাড়তে পারে। এ ছাড়া, অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কলাপাড়া উপজেলায় ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
পায়রা বন্দরের প্রস্তুতি
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পটুয়াখালী পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মো. আজিজুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৫টি পৃথক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ও পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ কমিটি, কন্ট্রোল রুম পরচিালনা কমিটি, ইমার্জেন্সি রেসপন্স কমিটি, মেডিকেল টিম ও বহিরাগত আশ্রয় প্রার্থীদের আবাসন ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ ছাড়া বন্দর চ্যানেল থেকে সব জাহাজ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বন্দরের নিজস্ব জলযান ও ইকুইপমন্টেসগুলো সর্বোচ্চ নিরাপদ অবস্থানে রাখা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এটি আজ সকাল ৬টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার পশিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ সব সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মাছধরা ট্রলারগুলোকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
Comments