যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২৫ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২৫ শতাংশ
স্টার ফাইল ফটো

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের তুলনায় পোশাক রপ্তানি কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশ সাত দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বস্ত্র ও পোশাক পণ্যের সামগ্রিক আমদানি ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে ১০৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নিজের পোশাক আমদানি ২২ দশমিক ০৫ শতাংশ কমে ৭৭ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের শীর্ষ পোশাক সরবরাহকারী দেশ চীনের বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানি ২২ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে ২৫ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিষ্ঠানটির পোশাক রপ্তানি ২৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬৩১ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশেরও বেশি পোশাক রপ্তানি করে। কোভিড-১৯ এর মারাত্মক বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় পোশাকের চাহিদা বেড়ে যায়।

মার্কিন খুচরা বিক্রেতারা  কোভিড-১৯ এর ফলে সামগ্রিক অবিক্রিত পণ্য বিক্রিতে মনোযোগ দেওয়ায় আমদানি হ্রাস পেয়েছিল। অন্যদিকে, বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি ভারসাম্য অবস্থায় পৌঁছাতে সমন্বয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে।

এনভয় লিগ্যাসির চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দোকানগুলোতে বিক্রি কমলেও অদূর ভবিষ্যতে রপ্তানি বাড়বে।

'গত বছরের তুলনায় মার্কিন ক্রেতারা এখন অনেক বেশি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন,' বলেন তিনি।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি সামগ্রিক হ্রাসের বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, 'উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে গত বছর ভোক্তারা ব্যয় কমিয়েছে, যে কারণে খুচরা বিক্রেতারা কম আমদানি করে।'

তাছাড়া দোকানে অবিক্রিত পণ্যে মজুত বেশি ছিল। তবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মূল্যস্ফীতি কমে আসায় মজুত কমতে শুরু করে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রেও সুদের হার কমানো হবে বলে জানান তিনি।

হাসান বলেন, 'উৎসবের মৌসুম, বিশেষত বড়দিনের মতো উপলক্ষে বিক্রি খুব ভালো ছিল; কারণ পুরোনো মজুত হ্রাস পেয়েছে। এতে এই বছর বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির পরিমাণ বাড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে।'

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম খুচরা বাণিজ্যিক সংগঠন ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের (এনআরএফ) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ম্যাথিউ শাই গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেন, খুচরা বিক্রেতারা একটি সফল ছুটির মৌসুম থেকে আসছেন।

প্রত্যাশা করা হচ্ছে, বিক্রয় প্রবৃদ্ধি প্রায় তিন থেকে চার শতাংশ হবে। যা মহামারির সময় বিক্রি যতটা বেড়েছিল, এখন তার থেকে আরও বেশি বাড়ছে, যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই প্রবৃদ্ধি এটাই বোঝা যায় যে, মন্দার সময়ও খুচরা বিক্রেতারা ভোক্তাদের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট ছিলেন; যা প্রকারান্তরে প্রমাণ করছে মার্কিন অর্থনীতি কতটা বলিষ্ঠ।

'আমি মনে করি, ভোক্তার ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে বেকারত্বের হার ও মজুরি বৃদ্ধি,' বলেন শাই।

তিনি আরও বলেন, 'এখন বেকারত্বের হার খুব কম ও মজুরি বৃদ্ধি স্থিতিশীল আছে।'

শাই বলেন, বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'চ্যালেঞ্জিং' নির্বাচনের মতো অন্যান্য বাহ্যিক কারণের পাশাপাশি ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হারের সঙ্গে কতটা ভারসাম্যপূর্ণভাবে কাজ করতে পারে তার ওপর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।

অনুষ্ঠানে খুচরা পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি বলেন, অনেকে গ্রাহকের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন, কারণ তারা মূল্য অব্যাহত রাখবে। পাশাপাশি তাদের ব্যয়ের ক্ষেত্রেও কার্পণ্য করবেন না।

Comments

The Daily Star  | English

65pc of suicide victims among students are teens: survey

Teenagers (aged 13-19) made up 65.7% of 310 students who died by suicide in 2024, according to a survey by Aachol Foundation.

1h ago