২০২২ সালে ঢাকায় গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১.০৮ শতাংশ: ক্যাব

ছবি: সুমন আলী/স্টার

রাজধানী ঢাকায় গত বছর বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ ছিল খাদ্য-বহির্ভূত খাতে। খাবারে এটি ছিল ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ।

আজ শনিবার পণ্য ও সেবার মূল্যবিষয়ক প্রতিবেদন ২০২২ প্রকাশ উপলক্ষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

সংবাদ সম্মেলনে মূল তথ্য উপস্থাপন করেন ঢাকার বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর।

তার মতে, গত বছর নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর গড় মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ যা 'সাধারণ' পরিবারের তুলনায় কম। নিম্নআয়ের মানুষের ক্ষেত্রে বার্ষিক খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

তিনি জানান, কয়েকটি পণ্য ও সেবায় দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এই পণ্য ও সেবাগুলো হলো—চাল, আটা, ডাল, বেকারি পণ্য, চিনি, মাছ, ডিম, দেশি মুরগি, ভোজ্য তেল, আমদানিকৃত ফল, চা ও কফি, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও আমদানি করা দুধ, পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ও পরিবহন খরচ।

বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি। ছবি: ক্যাব

গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারি থেকে 'সাধারণ' মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। মে মাসে কিছুটা কমার পর তা আবার জুন থেকে বাড়তে শুরু করে।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর হঠাৎ করে আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায় উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, পরবর্তী ২ মাস বৃদ্ধির পর ডিসেম্বরে তা কিছুটা কমে আসে।

জানুয়ারির তুলনায় অক্টোবরে 'সাধারণ' মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি ছিল। মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কম ছিল, যা আগস্টে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। ডিসেম্বরে তা কমে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ক্যাবের তথ্য মতে, প্রধানত মৌসুমি সবজির সহজলভ্যতা, আমন ধানের বাম্পার ফলন এবং মাছ-মাংসের দাম কমে যাওয়ায় ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে। বছরের শুরু থেকে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধি দেখা গেছে।

২০২২ সালের শেষ ৩ মাসে শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ গড় মূল্যস্ফীতি দেখা যাওয়ার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

ক্যাবর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, 'দেশে মাথাপিছু আয় বাড়লেও নিম্নআয়ের মানুষের আয় বাড়েনি। এই আয় বেড়েছে উচ্চবিত্তদের। করোনা পরবর্তী অনেক মানুষের আয় কমেছে। মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্নআয়ের মানুষের জীবনে প্রভাব পড়েছে। দ্রব্যমূল্য একবার বাড়লে আর কমার আশা করা যায় না। মানুষের আয় যেন বাড়ে, কর্মসংস্থান যেন বাড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে।'

'আয় বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আয় যাতে বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তা না হলে সংকট আরও বাড়বে,' তিনি যোগ করেন।

ক্যাবের মতে, নিম্ন ও মধ্যমআয়ের ভোক্তাদের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে রক্ষা করতে সরকারকে শহরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা স্কিম বাড়ানো উচিত। বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাজার মনিটরিং বাড়ানো উচিত। সিন্ডিকেশন ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ক্যাব, ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

28m ago