২০২৩ সালে রেকর্ড চা উৎপাদন

চা, চা বাগান, বাংলাদেশ চা বোর্ড, বাংলাদেশের চা,
ছবি: মোস্তফা সবুজ

রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেকর্ড ১০২ দশমিক ৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।

চা বোর্ডের কর্মকর্তা ও বাগান মালিকরা জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাতের অভাবে চা বাগানগুলোতে উৎপাদন কম হয়েছিল। কিন্তু পরে অনুকূল আবহাওয়া ও সহায়ক উদ্যোগের কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে।

তবে চা বাগানের মালিকরা সন্তুষ্ট নন, কারণ বছরব্যাপী দাম কম ছিল।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬৮টি বাগান ও ক্ষুদ্র চাষিদের বার্ষিক চা উৎপাদনের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, বার্ষিক উৎপাদন ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালের ৯৩ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।

গত বছরের ফলন ১৭০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উল্লেখ করে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, 'বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চা বোর্ড ও বাগান মালিকসহ অন্যান্য অংশীদারদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় রেকর্ড ফলন হয়েছে।'

চা খাত একটি শিল্প, তাই এখানে সঠিক পরিকল্পনা অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সরকার ২০১৭ সালে দেশের চা খাতের জন্য একটি উন্নয়ন রোডম্যাপ নিয়েছিল।'

সেই উন্নয়ন রোডম্যাপের যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন। যার মধ্যে আছে- প্রতি বছর চারা রোপণ এলাকা বাধ্যতামূলকভাবে ২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি, শ্রমিকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্ষুদ্র কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে চারা ও প্লাকিং মেশিন বিতরণ করা।

তবে তিনি বলেন, চা রপ্তানি বাড়াতে হলে উৎপাদিত চায়ের গুণগত মান উন্নত করতে হবে।'

গত বছর চা রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন কেজি, ২০২২ সালে যা ছিল শূন্য দশমিক ৭৮ মিলিয়ন কেজি।

অন্যদিকে রেকর্ড ফলন হলেও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ চা সমিতির চেয়ারম্যান কামরান তানভীরুর রহমান।

তিনি বলেন, 'এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া চলতি মৌসুমে চায়ের বিক্রি ও দাম উভয়ই কমেছে। ফলে চা বাগানের মালিকদের জন্য এই বাম্পার ফলন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

চট্টগ্রামে গত ২০টি সাপ্তাহিক নিলামে চায়ের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ১৭৫ টাকা কেজি, যা গত মৌসুমের একই সময়ে কেজিপ্রতি ছিল ২০০ টাকার ওপরে।

এ ছাড়া চলতি মৌসুমে প্রতিটি সাপ্তাহিক নিলামে প্রায় ৫০ শতাংশ চা বিক্রি হয়নি।

বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান উৎপাদন খরচের মুখে দাম ও বিক্রি কমে যাওয়া এ শিল্পের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন কামরান তানভীরুর রহমান।

তিনি বলেন, 'বিক্রি ও দাম না বাড়লে আগামী বছরগুলোতে অনেক বাগান টিকতে পারবে না।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

9h ago